স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির হাসনরাজা মিলনায়তনে শনিবার দিনব্যাপী তবলা প্রশিক্ষণ হয়েছে। এতে শহরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের ৪০জন শিক্ষার্থী অংশ নেন। দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করে বাণী সংগীত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি। প্রশিক্ষক ছিলেন বিশিষ্ট তবলাগুরু যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী পিনুসেন দাশ। পিনুসেন দাশ একুশে পদকপ্রাপ্ত সুনামগঞ্জের সংগীতগুরু রামকানাই দাশের ছেলে। তিনি শিক্ষার্থীদের তবলার বোললিপি ও প্রাচীন রচনাবলী বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেন। বিকেলে প্রশিক্ষণার্থীদের হাতে সনদপত্র তুলে দেন প্রশিক্ষক পিনুসেন দাশ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অ্যাড. অলক ঘোষ চৌধুরী, আইনজীবী-সাংবাদিক খলিল রহমান, বিশিষ্ট তবলাবাদক ও বাণী সংগীত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের পরিচালক পরিচালক বাবুল আচার্য, নৃত্য প্রশিক্ষক শ্রাবন্তী পুরকায়স্থ, তবলা বাদক ও প্রশিক্ষক অমিত বর্মণ।
পিনুসেন দাশ সমাপনী বক্তব্যে প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তবলার প্রতি ভালোবাসা আছে বলেই দিনভর এই আয়োজনে তোমরা ছিলে। যদি নিয়মিত চর্চা না থাকে তাহলে এই প্রশিক্ষণ কাজে আসবে না। তাই চর্চা, সাধনা চালিয়ে যেতে হবে। এটিকে দৈনন্দিন কাজের অংশ হিসেবে চিন্তা করতে হবে। তাহলেই সাফল্য আসবে।
তবলাশিল্পী ও গুরু পিনুসেন দাশ আরও বলেন, গানের ক্ষেত্রে যেরকম স্বরলিপি থাকে, তবলার ক্ষেত্রে কিন্তু সেরকম হয় না। তবে এটা নিয়ে দারুণ কাজ করে গেছেন কিংবদন্তি তবলাসাধক আচার্য শংকর ঘোষ। তারই সুযোগ্য শিষ্য প-িত বিপ্লব ভট্টাচার্যের কাছে আমি এই বোললিপি পদ্ধতির শিক্ষা লাভ করি। তবে শংকর ঘোষ মহাশয় আবিষ্কৃত পদ্ধতির সঙ্গে বিপ্লবদা কিছুটা সংযুক্তি করেছেন। তাঁর সঙ্গে আমার মতো অধমের অযোগ্যতাকে স্বীকার করেই দুঃসাহস করে আরও একটু যৎসামান্য চিন্তা ভাবনা করেছি আর কি। কিন্তু বলাই বাহুল্য এর মূল আবিষ্কারক মহান তবলাসাধক আচার্য শংকর ঘোষ। এটি তবলার বিভিন্ন অংশের সঙ্গে আঙুলের সমন্বয়ে অভিনব পদ্ধতি। যা থেকে তবলা শিক্ষার্থীরা সহজেই তবলার বোলবানী সহজে তুলতে পারবেন।’
তিনি আরও বলেন, আমার জানা মতে বাংলাদেশে এ বিষয় নিয়ে প্রথম কোনো প্রশিক্ষণ কর্মশালা আয়োজন করা হলো। এজন্য আমি আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।
শুরুতে পিনুসেন দাশ তাঁর তবলাগুরু ভারতের বেনারস ঘরানার দিকপাল প্রখ্যাত তবলাশিল্পী ও গুরু পণ্ডিত সমর সাহার একটি রচনা (টুকরা) দিয়ে কর্মশালা শুরু করেন। পরে তিনি প-িত জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ, ওস্তাদ আহমেদ জান থিরকুয়া, ওস্তাদ আমির হোসেন খাঁ, প-িত শ্যামল বোসসহ উপমহাদেশের প্রখ্যাত তবলাগুণিদের রচনাবলি থেকে প্রশিক্ষণ দেন। দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ৪০জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেন। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের মধ্যে সনদপত্র বিতরণ করা হয়।