ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা উপজেলার সদর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রাম সংলগ্ন কংস নদীতে ইঞ্জিনচালিত নৌকার পাখা লেগে মাছ শিকারের জন্য পেতে রাখা জাল ছিঁড়ে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শনিবার বিকেলে জেলেদের হামলায় ছয়টি প্রতিমা ভাঙচুর ও হিন্দু ধর্মাবলম্বী ৭জন নারী-পুরুষকে মারধর করে আহত করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও একজনকে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ উপজেলার গাজীনগর গ্রামের বাসিন্দা স্বপন চন্দ্র শীল (৪৭) বাদী হয়ে ধর্মপাশা উপজেলার দুধবহর ও নোয়াগাঁও গ্রামের ১০জন জেলের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ২/৩জন করে আসামি করে ওইদিন রাতেই ধর্মপাশা থানায় একটি মামলা করেছেন।
ধর্মপাশা থানা পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ উপজেলার বড়তলী বানিয়াহারী ইউনিয়নের গাজীনগর গ্রামে শুক্রবার মনসা পূজা হয়। ওই গ্রামের হিন্দু ধর্মাবলম্বী ৩০/৪০জন নারী-পুরুষ মনসা পূজার ছয়টি প্রতিমা নিয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকাযোগে শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে ধর্মপাশা উপজেলার সদর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের সামনে থাকা কংস নদীতে আসেন। কিছুক্ষণ ইঞ্জিনচালিত নৌকাটি নদীর এদিক ওদিক ঘোরাঘুরি করে। এক পর্যায়ে বেলা পৌনে তিনটার দিকে এই ইঞ্জিনচালিত নৌকাটির পাখায় পেঁচিয়ে ওই নদীতে মাছ শিকারের জন্য পেতে রাখা উপজেলার দুধবহর গ্রামের জেলে সর্দার কাশেম মিয়া (৫৭) ও তার লোকজনদের জালটির কিছু অংশ ছিঁড়ে যায়। জেলেরা উত্তেজিত হয়ে গালমন্দ শুরু করলে এ নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে জেলে সর্দার কাশেম মিয়া ও তার সঙ্গে থাকা জেলেরা উত্তেজিত হয়ে লাঠিসোটা ও কাঠের বর্গা দিয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় থাকা লোকজনদের মারধর ও ছয়টি প্রতিমা ভাঙচুর করে নদীতে ফেলে দিয়ে তারা সেখান থেকে চলে যায়। জেলেদের মারধরে গাজীনগর গ্রামের পলাশ চন্দ্র দে (৩৫), দুলাল চন্দ্র দাস (৪০), শিল্পী রানী দাস (৩০) ও স্বপ্না রানী দেসহ অন্তত ৭জন আহত হন। গুরুতর আহত পলাশ চন্দ্র দে কে ময়মনসিংহ ও দুলাল চন্দ্র দাসকে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্যরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
ধর্মপাশা থানার এসআই সোহেল মাহমুদ বলেন, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মারধর ও মূর্তি ভাঙচুরের অভিযোগের ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামিদেরকে গ্রেফতারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।