স্টাফ রিপোর্টার ::
শান্তিগঞ্জ উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়নের সিচনি (সৈদপুর) গ্রামে মসজিদে ঢুকে কোরআন মাথায় নিয়ে শপথ করে তা ভিডিও করে প্রেমিকাকে প্রেরণের জের ধরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টায় সিচনী (সৈদপুর) এলাকার জগন্নাথপুর-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে মসজিদ কমিটি পক্ষ এবং প্রতিপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
মসজিদ কমিটি পক্ষের আহতরা হলেন- সিচনী গ্রামের মৃত আনফর আলীর ছেলে জুনাব আলী (৬০), জুবেদ আলীর ছেলে আবিদ আলী (৫০), মৃত কালা মিয়ার ছেলে হানিফ আলী (৫৫), জুনাব আলীর স্ত্রী নিলতেরা বিবি (৫০), মৃত ধলা মিয়ার ছেলে তৈমুজ আলী (৪৫), মৃত আ. মন্নাফের ছেলে রহমান (৫৫)। প্রেমিক আহমদ জামান পক্ষের আহতরা হলেন- সিচনী (সৈদপুর) গ্রামের তার ছেলে মিল্লাত (২০), ইসকান্দর আলীর ছেলে আমজদ (৪১), সাঞ্জব আলী (৩৩) ও তার ছোট ভাই রবিউল (২৫), রহমত আলীর ছেলে লাহিন (২৩), আবুল কালামের ছেলে আরিফুল (৩৯)। আহত ৮ জনকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে এবং গুরুতর আহত ৪ জনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য আহতদেরকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ফুলভরী গ্রামের মেয়ে (৩০)-এর সাথে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল শান্তিগঞ্জ উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়নের সিচনী (সৈদপুর) গ্রামের মৃত ইসকন্দর আলীর ছেলে সৈয়দপুর জামে মসজিদের কোষাধ্যক্ষ আহমদ জামানের (৪০)। গত ৪/৫ মাস পূর্বে আহমদ জামান সিচনী পূর্বপাড়া জামে মসজিদের ভিতরে ঢুকে কোরআন শরীফ মাথায় রেখে মেয়েটিকে বিয়ের প্রতিজ্ঞা করে ভিডিও ধারণ করেন এবং মেয়েটির কাছে তা প্রেরণ করেন। এরই ফাঁকে মাসখানেক ধরে তাদের সম্পর্কে ফাটল দেখা দেয়। মেয়েটিকে বিয়ে না করার কারণে সেই ভিডিও গত ৭/৮ দিন ধরে সে স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ গ্রামের লোকজনের কাছে পাঠায়। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভাইরাল হয়।
এদিকে, মসজিদে ঢুকে ভিডিও ধারণ করার কারণে মসজিদের মুতওয়াল্লীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। একপর্যায়ে শুক্রবার জুমার নামাজের পর সিচনী পূর্বপাড়া জামে মসজিদের মুতওয়াল্লীসহ মসজিদে উপস্থিত লোকজন সিদ্ধান্ত নেন যে আক্তাপাড়ার মাওলানা মইনুল হকের কাছে এ বিষয়ে ফতুয়া গ্রহণ করবেন। এরপর গতকাল শনিবার সকালে আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষকের কাছে যাওয়ার জন্য সিচনী পয়েন্টে জড়ো হন গ্রামের কয়েকজন মুরুব্বী। এ সময় আহমদ জামানের ছেলে মিল্লাত গ্রামের মুরুব্বীদের জমায়েতের সংবাদ তার বাড়িতে মোবাইলফোনে জানালে আহমেদ জামানের স্বজনরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে মুরব্বীদের উপর হামলা করে। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে শান্তিগঞ্জ থানার এসআই নাজমুল হকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
শান্তিগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ খালেদ চৌধুরী এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, বর্তমানে এলাকার পরিস্থতি শান্ত রয়েছে।