“বাংলাদেশের বিষয়ে মাতবরি না করে ভারতকে নিজেদের ঘর সামাল দিতে বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। ভারতের উদ্দেশে বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষে অবস্থান না নিয়ে নিজেদের ঘর সামাল দিন। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর দয়াগঞ্জে গণমিছিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।”
সত্যিকার অর্থে আমরা দেশের সাধারণ মানুষেরা অন্য কোনও দেশের গোলামি করতে চাই না কিংবা অন্য কোনও দেশ আমাদের দেশের উপর মাৎবরি করুক তা চাই না। সমস্যাটা আসলে আমাদের কোনও কোনও দালাল রাজনীতিকদের নিয়ে। তাঁরা জনগণ থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে বিদেশিদের দালালে পরিণত হতে ভালোবাসেন। প্রকারান্তরে পলাশীর যুদ্ধে মীরজাফরের ভূমিকায় নিজেকে আবির্ভূত করেন। আমরা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের নাগরিকরা মীরজাফর হতে চাই না, বিদেশির দালাল হতে চাই না, বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হতে চাই, কারও সঙ্গে শত্রুতা চাই না।
বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে বিদেশি দেশসমূহের বিভিন্ন অনভিপ্রেত তৎপরতা ইতোমধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে। যেগুলোকে কূটনৈতিক নীতি বহির্ভূত আচরণের পর্যায়ে ফেলা যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অপতৎপরতা নিয়ে ইতোমধ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি বাংলাদেশকে অন্য কোনও দেশের তাঁবেদার রাষ্ট্র হতে দিতে চান না। গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এই একই অনিভিপ্রেত কূটনৈতিক আচরণের সমালোচনা করেছেন। তাঁকে তাই ধন্যবাদ। কিন্তু তিনি তাঁর সমালোচনার তর্জনি তোলেছেন নাটেরগুরু আমেরিকাকে বাদ দিয়ে ভারতের দিকে। এই করে তিনি প্রমাণ করেছেন যে, মুক্তিযুদ্ধের সহায়ক ও সক্রিয় সহযোদ্ধা ভারতের অবদানের কথা ভুলে থাকতে তিনি পছন্দ করেন এবং সেই সঙ্গে আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধে আমেরিকার বিরোধিতা-শত্রুতার কথা ভুলে গেছেন।
এবংবিধ প্রসঙ্গে অনেক অনেক কথা বলার আছে এবং রাজনীতি সচেতন যে-কেউ বলতে পারবেন। সে-লম্বা ফিরিস্তি দেওয়ার অবকাশ এখানে নেই। আপাতত কেবল বলি, দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল দেশকে অন্য রাষ্ট্রের তাঁবেদারে পরিণত না করার প্রশ্নে একাত্ম হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণের নিশ্চয়তা চাই। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে এটি একটি জরুরি জনদাবি। আমাদের রাজনীতিক দলগুলো অন্য দেশের দালালি করবে না বরং বন্ধুত্বের দৃঢ়বন্ধনে আবদ্ধ হবে এবং বন্ধুত্ব কূটনৈতিক সীমা লঙ্ঘন করে তাঁবেদারিতে পরিণত হবে না, একে অন্যের আভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকবে।