1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৬:৪৭ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

সুনামগঞ্জবাসীর মানবিক সহায়তা পেল বন্যাক্রান্ত বান্দরবান

  • আপডেট সময় শনিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার ::
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে পাহাড়ি জেলা বান্দরবান। এরকম ভয়াবহ বন্যার সাথে পাহাড়ি এলাকার মানুষেরা খুব একটা পরিচিত না হওয়ায় ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে অনেক। গত বছরের জুলাই মাসে ঠিক এরকম ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছিলেন সুনামগঞ্জবাসী। তখন সুনামগঞ্জের মানুষের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল দেশের অন্যান্য জেলার মানুষ। একের পর এক সহায়তার ট্রাক ঢুকেছিল সুনামগঞ্জে। তাদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগ অন্যতম। সেই কৃতজ্ঞতাবোধ থেকে চট্টগ্রাম বিভাগের বান্দরবানে গিয়ে বন্যাক্রান্ত এলাকায় গিয়ে সুনামগঞ্জের মানুষের দেয়া মানবিক সাহায্য পৌঁছে দিয়েছে কয়েকজন উদ্যমী তরুণ ও যুবক।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংবাদে বান্দরবানের ভয়াবহ অবস্থার দেখার পর সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মী দেওয়ান গিয়াস চৌধুরী ফেসবুকে বান্দরবানের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান। তাতে সাড়া দেন সুনামগঞ্জের বিভিন্ন পেশার মানুষ। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মানুষ মোবাইলে পাঠাতে থাকেন সহায়তা। এসব দেখে এগিয়ে আসেন রনজিত দে, নাসিম চৌধুরী, মোহাম্মদ আম্মার, সাইফুল ইসলাম রাহী, জালাল সরকার আকবর, বায়েজিদ আল সামায়ূন, আমিনুল নাঈম, ইয়াসির জাওয়াদ, ফারদিন হাসানসহ কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবক। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও মানুষের কাছে গিয়ে আর্থিক সহায়তা সংগ্রহ করেন। সব মিলিয়ে তারা ১ লক্ষ ৫৬ হাজার ৪৬১ টাকা সংগ্রহ করেন। পরে তাদের মধ্যে ৫ জন বান্দরবান গিয়ে তিনদিন থেকে সেখানের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার দেখে দেখে ৬০টি পরিবারকে বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করে বৃহ¯পতিবার সুনামগঞ্জে ফিরেন। কাজের স্বচ্ছতা ও বিশ্বস্ততার জন্য বান্দরবানের যাওয়া-আসা এবং থাকা-খাওয়াসহ অন্যান্য খরচ তারা ব্যক্তিগতভাবে বহন করেছেন। এসে তারা ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে তাদের আয় এবং ব্যয়ের হিসাব সবার সাথে শেয়ার করেন।
তারা জানান, বান্দরবানের সাঙ্গু নদীর তীরবর্তী প্রায় সকল গ্রাম বিধ্বস্ত অবস্থায় আছে। তাদের মধ্যে মধ্যমপাড়া, উজানীপাড়া, কালাঘাটা, বালাঘাটাসহ কিছু নির্দিষ্ট ঘরের পরিবারগুলোকে আমরা ভাগ ভাগ করে যাদের ঘর একেবারে ভেঙে গেছে এরকম ১৬ টি পরিবারকে দেড় বান করে ২৪ বান টিন, ১৫টি পরিবারের ঘরের বিছানা নষ্ট হয়েছে এমন ১৫টি পরিবারকে বালিশ ও তোষক। বাকি ২৯টি পরিবারকে ১৫ দিনের খাদ্যসামগ্রী প্রদান করেছি। তাদের এই বিতরণ কাজে স্থানীয় বিডি ক্লিনসহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকরা সহযোগিতা করেছেন।
স্বেচ্ছাসেবক মো. আম্মার বলেন, বন্যায় বান্দরবানের মানুষ একরকম তিনদিন আবদ্ধ ছিল। আমরা গিয়ে শুনেছি মূল শহরের ১৭ফিট উপর দিয়ে পানি বয়ে গেছে। বন্যায় এতো জোরে আঘাত দিয়েছে যে তিন তলাবিশিষ্ট ভবনও ধ্বসে গেছে। বান্দরবানের সাঙ্গু নদীর তীরবর্তী যে গ্রামগুলো আছে অধিকাংশ ঘরের অবস্থা দেখলে মনে হয়েছে কোন পারমাণবিক বোমায় বিধ্বস্ত এলাকা। অধিকাংশ ঘর মাটির সাথে মিশে গেছে। আমাদের সহায়তা ওদের ক্ষতির সাথে তুলনা করলে একেবারে সামান্য। সরকার যদি এগিয়ে না আসে পরিবারগুলোর সব শেষ হয়ে যাবে।
এই মানবিক কাজের উদ্যোক্তা দেওয়ান গিয়াস চৌধুরী বলেন, আমরা যখন ২০২২ সালে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ি তখন মানুষ কতটা অসহায় হয়ে পড়ে তা অনুভব করেছি। মানুষ কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয় তা নিজের চোখে দেখেছি। যদি দেশের বিভিন্ন মানুষের সাহায্য সহযোগিতা সুনামগঞ্জে না আসতো তাহলে আমাদের জন্য বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়তো। এই কৃতজ্ঞতা থেকে যখন দেখলাম বান্দরবানের মানুষের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে বিপদগ্রস্ত তখন বিবেক তাড়না দিল যে তাদের জন্য কাজ করতে হবে। তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। সেই চিন্তা থেকে ফেসবুকে অর্থ সংগ্রহের আহ্বান জানালে আমার ফ্রেন্ডলিস্টে থাকা দেশ-বিদেশের বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় স্বজনসহ সবাই এগিয়ে এসেছেন, অর্থ দিয়েছেন। পরে সেই অর্থ নিয়ে নিজেরা গিয়ে বান্দরবানের মানুষের অবস্থা নিজ চোখে দেখে সাধ্যমতো সহযোগিতা করে এসেছি। আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই আমার মানবিক ডাকে সাড়া দিয়েছেন। আমরা ভবিষ্যতে এরকম মানবিক কাজে থাকার জন্য সবাইকে আহ্বান জানাই।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com