গত ১৫ আগস্ট ২০২৩ তারিখে দেশজুড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হয়ে গেলো। স¤পাদকীয় লেখার পরিসরে সে-আলোচনায় নিরত হওয়াটা আপাতত ধান ভানতে শিবের গীতের মতো অনভিপ্রেত প্রসঙ্গ হয়ে উঠতে পারে বিধায় তার অবতারণা থেকে স্বেচ্ছায় বিরত থাকছি। কিন্তু একটি প্রসঙ্গ মনের মধ্যে বড় বেশি তোলপাড় করছে। প্রসঙ্গটি হলো একটি পত্রিকা (আন্তর্জাল সংস্করণ) লিখেছে, “জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে খাদ্যসামগ্রী ও বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছে সুনামগঞ্জ ২৮ বিজিবি”।
জনসাধারণের মধ্যে এই বিষয়টি একটি বার্তা বহন করে নিয়ে গেছে। সে বার্তাটি বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিক আদর্শের বার্তা। আর সেই সঙ্গে দেশের সীমান্তে সজাগ বিজিবি জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে জাতির জনকের আদর্শের প্রতি অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। কারণ বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিক আদর্শের অভিমুখ ছিল কেবল দেশের উন্নয়ন নয়, বরং উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে দেশের সকল মানুষের জন্য খাদ্য, বস্ত্র বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষার পূর্ণ নিশ্চয়তা দান।
বিজিবিকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন এই জন্যে যে, তাঁরা জাতিকে জাতির পিতার রাজনীতিক আদর্শের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। জাতির জনকের রাজনীতিক আদর্শ কী ছিল সেটা তিনি তাঁর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে লিখে রেখে গেছেন। তিনি লিখেছেন, “আমি নিজে কমিউনিস্ট নই। তবে সমাজতন্ত্রে বিশ্বাস করি এবং পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে বিশ্বাস করি না। একে আমি শোষণের যন্ত্র হিসাবে মনে করি। এই পুঁজিপতি সৃষ্টির অর্থনীতি যতদিন দুনিয়ায় থাকবে ততদিন দুনিয়ার মানুষে উপর থেকে শোষণ বন্ধ হতে পারে না।” (দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড, দ্বিতীয় মুদ্রণ : সেপ্টেম্বর ২০১২, পৃষ্ঠা : ২৩৪)।
জাতির জনকের এই কথার পর আর কোনও কথা থাকে না। এই দেশে এই সময়ের আর্থসামাজিক ব্যবস্থার বাস্তবতায় আসলে রাজনীতিক আদর্শের প্রশ্নে ফাঁকিটা কোথায় সেটা বুঝার জন্যে কারও কাছ থেকে বুদ্ধি ধার করার বোধ করি দরকার নেই। আর কারও যদি বুদ্ধি ধার করার প্রয়োজন পড়ে তিনি কোন স্বার্থ চরিতার্থ করতে ব্যস্ত আছেন ও শ্রেণির লোক, তা অনায়াসেই বোধগম্য হয় ও নির্ধারণ করা যায়।