স্টাফ রিপোর্টার ::
মামলাসংক্রান্ত কাজে আদালতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে এক যুবককে হত্যার দায়ে একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন বিচারক। বুধবার সুনামগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. হেমায়েত উদ্দিন এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের গলাখাল গ্রামের মো. ফয়েজ আহমদ, মো. সাজিদ মিয়া, সেবুল মিয়া, এহসানুল করিম ও ইসরাইল আলী। তাদের মধ্যে ফয়েজ আহমদকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় তিনি কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। অন্যদের মধ্যে সাজিদ মিয়া, এহসানুল করিম ও ইসরাইল আলী পলাতক রয়েছেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর খায়রুল কবির রুমেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত নথি সূত্রে জানা যায়, গলাখাল গ্রামের মিজানুর রহমানের পরিবারের সঙ্গে আসামিদের জমিজমা নিয়ে বিরোধ ও মামলা ছিল। মিজানুর নিজে বাদী হয়ে একটি মামলা করেন তাদের বিরুদ্ধে। পরে ‘হত্যার হুমকির অভিযোগে’ ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন মিজানুর রহমানের চাচাতো ভাই মাসুক মিয়া। মাসুক মিয়ার করা মামলায় ২০২২ সালের ২১ জুলাই আদালতে জামিন নিতে যান ওই পাঁচ আসামি। ওই দিন মামলার বাদী মাসুক মিয়ার সঙ্গে আসেন মিজানুর রহমানও। আসামিরা জামিন নিয়ে মিজানুর রহমানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরে আইনজীবী সহকারী সমিতির সামনে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মিজানুর রহমানের ওপর হামলা চালান তারা। একপর্যায়ে ছুরিকাঘাতে মিজানুর গুরুতর আহত হন। বিষয়টি দেখে উপস্থিত জনতা, আইনজীবী ও তাদের সহকারীরা এগিয়ে এসে ফয়েজ, সাজিদ ও সেবুলকে আটক করেন। সাহান নামের অপর একজন পালানোর সময় জনতার হাতে আটক হয়। পরবর্তীতে আটক তিনজনকে চাকুসহ পুলিশে সোপর্দ করা হয়। অপরদিকে ছুরিকাঘাতে আহত মিজানুর রহমানকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর নিহত ব্যক্তির বাবা ফটিক মিয়া বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। বিচারকালে আদালতে ২৯ ব্যক্তি এ মামলায় সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে এ মামলার রায় ঘোষণা করেন বিচারক। রায় ঘোষণার পর ফয়েজ আহমদ ও সেবুল মিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়।