সড়কে গাড়ি রাখার কারণে ১৮ জনকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। পত্রিকায় (দৈনিক সুনামকণ্ঠ, ১৩ আগস্ট ২০২৩) লেখা হয়েছে, “জগন্নাথপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে প্রধান সড়কে অবৈধভাবে গাড়ি পার্কিং করে যানজট সৃষ্টির মাধ্যমে জনভোগান্তির দায়ে … ১৮ ব্যক্তিকে ৩ হাজার ৯শ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ সময় আগামীতে সড়কে আর গাড়ি পার্কিং না করার জন্য সবাইকে সতর্ক করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।”
এবংবিধ আইনি কর্মক্রিয়া অর্থাৎ অভিযান দেশের ভেতরে প্রত্যন্ত অঞ্চলব্যাপী নিয়মিত হচ্ছে ইদানিং, বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই। দেশের সার্বিক অবস্থার উন্নয়নে এটি একটি ভালো দিক, তাতে কোনও সন্দেহ নেই, এবং আমরা মনে করি, জনস্বার্থে এর আওতা বাড়ানো উচিত।
রাস্তায় গাড়ি রাখা অবশ্যই একটি স্থান দখল করে রাখার (হলেই বা তা সাময়িককালের জন্যে) বিষয়। আইনত তা অবৈধ। এই দখল করার পেছনে যানটি কীছু সময়ের জন্য রাখা ছাড়া অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই। এই অবৈধ দখলের জন্য জরিমানার দ- প্রদান করা হচ্ছে, যাতে রাস্তায় যানজট সৃষ্টির মাধ্যমে জনভোগান্তির বাস্তবতা তৈরি না হয়। কিন্তু দেশে এইরূপ অস্থায়ী দখলের চেয়ে স্থায়ী দখলের পরিমাণ শতসহ¯্রগুণে বেশি, এমনকি হতে পারে তা লক্ষগুণের চেয়েও বেশি। মাঝে মাঝে এইরূপ দখল উচ্ছেদের অভিযান পরিচালিত হতে দেখা যায় দেশর বিভিন্ন স্থানে। এই তো গত কীছুকাল আগে সুনামগঞ্জে অবৈধভাবে খাল দখলোচ্ছেদের অভিযান পরিচালিত হয়েছে এবং বলাবাহুল্য তা এখনও অসমাপ্ত অবস্থায় আছে। এমন বেআইনি দখলের হিসাব কেউ জানে না, এমনকি বোধকরি আদলতও নয়। খোঁজখবর নিলে দেখা যাবে যে, সরকারি জায়গাজমি কিংবা বাড়ি দখল করে বসে আছেন কোনও প্রভাবশালী কিংবা প্রভাবশালী মহলেরা। তাছাড়া প্রতিটি শহরের ফুটপাত দখল করে রাখা হয়। রাখেন ব্যবসায়ীরা। এমনকি কোনও কোনও ক্ষেত্রে সরকারি জমি কিংবা বাসাবাড়ি কেউ কেউ দখল করে নিজের করে নিয়েছেন। সুনামগঞ্জও তার ব্যতিক্রম নয়, অনুসন্ধান করলে অবৈধভাবে দখল করা দুয়েকটা বাসাবাড়ি কিংবা ভূমিখ-ের খোঁজ পাওয়া যেতে পারে। আর এখানে ফুটপাত তো দখল হয়েই আছে। এতে করে পথচলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়, মানুষের ভোগান্তি বাড়ে। সেটা দেখার
কেউ নেই। দেখেশুনে মনে হয় এই ফুটপাত দখলকারীরাই কেবল জনপ্রতিনিধিদের ভোট দিয়ে থাকেন, এরাই কেবল পৌরসভার ভোটার, অন্যরা কেউ না।
বিদগ্ধমহলের ধারণা এইরকম জবরদখলকৃত স্থান অর্থাৎ খালবিল, নদীনালা, জমি, ঘরবাড়ি, ফুটপাত ইত্যাদির তালিকা তৈরি করে সেগুলো উদ্ধারের প্রচেষ্টা চালানো উচিত। আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের বরাবরে এইসব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের দাবি করছি।