আকরাম উদ্দিন ::
বিভিন্ন কাজে ঢাকায় গিয়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন সুনামগঞ্জের ৩৯ বাসিন্দা। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন তারা। বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৬ জন রোগী সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তবে সুনামগঞ্জে থাকা অবস্থায় কেউ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হননি।
সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, গত ১১ জুলাই থেকে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী আসা শুরু হয়। এসব রোগীদের পরীক্ষা করে ডেঙ্গু আক্রান্ত শনাক্ত হলে তাদেরকে বিভিন্ন সময়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। ইতিমধ্যে ৩২ জনকে চিকিৎসা সেবা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ১ জনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে তিনি এখন সুস্থ। বর্তমানে ৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি আছে।
রবিবার দুপুরে সরেজমিনে গেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর সদর হাসপাতালের ৫ম তলায় ডেঙ্গু ওয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে। এই ওয়ার্ডে ৫টি বেড আছে।
রোগীদের স্বজনরা জানান, এসব রোগীরা ঢাকায় ব্যবসা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকা অবস্থায় এডিশ মশার কামড়ে জ্বরে আক্রান্ত হন। জ্বর না কমায় এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ব্যথা হওয়ায় দ্রুত সুনামগঞ্জে চলে আসেন তারা পরিবারের কাছে। পরে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ডেঙ্গু জ্বর ধরা পড়ে। তখন থেকে তাদেরকে চিকিৎসা দেয়া শুরু হয়।
হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগী তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের বাসিন্দা মিজানুর রহমান (২০), তিনি ভর্তি হয়েছেন গত বৃহ¯পতিবার। ঢাকায় ব্যবসা করেন তিনি। অসুস্থ হলে সেবা করার কেউ না থাকায় বাড়িতে চলে আসেন। পরে সদর হাসপাতালের পরীক্ষায় ডেঙ্গু জ্বর ধরা পড়ে। তখন থেকে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন তিনি।
সদর উপজেলার রঙ্গারচর ইউনিয়নের মাহমুদুল হাসান (৯)। তিনি ভর্তি হয়েছেন রবিবার। তার অভিভাবক জানান, সে ঢাকায় বেড়াতে গিয়ে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলার ডুংরিয়ার জাবের আহমদ (২৩), তিনি ভর্তি হয়েছেন বুধবার। তিনি বলেন, ঢাকায় তার ফুফুর বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। পরে জ্বরের লক্ষণ হওয়ায় চলে আসেন সুনামগঞ্জে তার বাড়িতে। সদর হাসপাতালে এসে পরীক্ষা করলে ডেঙ্গু জ্বর ধরা পড়ে।
সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের শাহজাহান মিয়া (২০), ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে তিনি ভর্তি হয়েছেন শনিবার দুপুরে সদর হাসপাতালে।
দোয়ারাবাজার উপজেলার পশ্চিম বাংলাবাজার ইউনিয়নের শফিকুল ইসলাম (৪১), তিনি ও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বৃহ¯পতিবার সকালে ভর্তি হন সদর হাসপাতালে। সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের মো. বুরহান উদ্দিন (২০), তিনিও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বৃহ¯পতিবার সকালে ভর্তি হয়েছেন সদর হাসপাতালে।
হাসপাতে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, এই ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত আর যাতে কেউ না হয়। সে জন্য এটা প্রতিরোধ করা জরুরি। সার্বিক পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে সচেতন হওয়ার ব্যবস্থা নিতে হবে। নইলে সুনামগঞ্জেও এডিশ মশার জন্ম হতে পারে। মশার কামড়ে হতে পারে ডেঙ্গু জ্বর।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের তত্তাবধায়ক (উপ-পরিচালক) ডা. মো. আনিসুর রহমান জানান, ঢাকা থেকে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রোগীরা এসেছে। তারা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। আমরা রোগীদের জ্বর কমে যাওয়ার চিকিৎসা দিচ্ছি। ৩৯ জন রোগীর মধ্যে ১ জনের অবস্থা অবনতি হওয়ায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেই রোগীও সুস্থ হয়েছেন। এখন হাসপাতালে ভর্তি আছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ৬ জন রোগী। তাদের চিকিৎসা চলছে।