বিশেষ প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্তরা ভারমুক্ত হয়ে এখন ফুরফুরে মেজাজে আছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গত ৬ আগস্ট গণভবনে দলের বিশেষ বর্ধিত সভায় সারাদেশের আওয়ামী লীগের সব সাংগঠনিক ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের ভারমুক্ত করে দেন। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দিয়ে বলেছিলেন, ‘আপনাদেরকে ভারমুক্ত করে দিলাম। আজকের বৈঠকে সবার সম্মতিতে ভারমুক্ত করে দিলাম।’
এরপর থেকেই সুনামগঞ্জের শাল্লা ও জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক খুশি। তারা আগামী জাতীয় নির্বাচনে শেখ হাসিনার নির্দেশনা মেনে দলের মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করার অঙ্গীকার করে উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিবদমান গ্রুপিংয়ের অবসান ঘটানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
জানা গেছে, ২০১৪ সনে শাল্লা উপজেলার সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের বর্ষীয়ান নেতা অলিউল হক। প্রায় এক দশক আগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিম চন্দ্র দাস প্রয়াত হওয়ার পর থেকে তিনি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সৎ ও নির্লোভ। এই নেতা পঞ্চাশের দশক থেকে দুর্গম উপজেলা শাল্লায় আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে কাজ করছেন। তিনি পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব পাওয়ায় খুশি তৃণমূলের ত্যাগী নেতৃবৃন্দ। তার পরিবারের লোকজনও খুশি।
তার সন্তান উপজেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা লেলিন বলেন, আমার বাবা পঞ্চাশের দশক থেকে আমরা বাবা শাল্লায় আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে কাজ করছেন। আমাদেরকেও বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগের আদর্শে অনুপ্রাণিত করেছেন। সারাজীবন সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করলেও তিনি দলীয়ভাবে কোনও সুযোগ-সুবিধা পাননি। অবশেষে নেত্রী বাবাকে উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব দিয়েছেন। শেষ বয়সে এই সম্মান পেয়ে খুশি আমার বাবা। আমরাও উজ্জীবিত।
জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন সাবেক পৌর চেয়ারম্যান ও প্রয়াত বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ হারুনুর রশিদ হিরন মিয়ার ছেলে মিজানুর রশিদ ভূইয়া। হিরন মিয়া জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন। আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে তিনি বিশেষ ভূমিকা রাখেন। তার সন্তান মিজানুর রশিদ ভূইয়া গত উপজেলা সম্মেলনে সভাপতি হওয়ার কথা থাকলেও তাকে সিনিয়র সহ-সভাপতি করা হয়। সভাপতি আকমল হোসেন মারা গেলে তিনি ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনিও প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা কর্তৃক ভারমুক্ত হওয়ায় খুশি।
মিজানুর রশিদ ভূইয়া বলেন, আমি নেত্রীর সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে খুশি। আমরা তার কাছে অঙ্গীকার করেছি সব ভেদাভেদ ভুলে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে থাকার। আমরা নেত্রীর নির্দেশে ভারমুক্ত হওয়ার পর থেকেই দলকে শক্তিশালী করতে, বিভেদ কমাতে কাজ শুরু করেছি। আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।