মো. শাহজাহান মিয়া ::
জগন্নাথপুরে আমন আবাদের ধুম পড়েছে। জমি চাষাবাদে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন কৃষকরা। কয়েক দিনের বৃষ্টিপাতে জমি চাষাবাদ সহজ হয়েছে। ফলে প্রতিযোগিতামূলক চাষাবাদ চলছে। তবে গত বছর হাইব্রিড ধানের ফলন ভালো হওয়ায় এবার হাইব্রিড জাদের ধান আবাদে কৃষকদের আগ্রহ বেশি। এতে গত বছর থেকে এবার বেশি জমি আবাদ হচ্ছে। যদিও অন্য বছরের তুলনায় এবার কৃষি খরচ অনেক বেড়েছে।
গত প্রায় ৩ সপ্তাহ ধরে উপজেলাজুড়ে জমিতে বীজতলা তৈরি, বীজধান বপন, ধানের চারা পরিচর্যা, সার প্রয়োগসহ নানা কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। অন্যদিকে চারাধান রোপণের জন্য মূল জমি পরিচ্ছন্নতা, হালচাষ ও আইল দিয়ে পানি সংরক্ষণ করে রাখা হচ্ছে। এর মধ্যে অনেকে জমি রোপণ করছেন। সব মিলিয়ে বীজধান বপন ও চারাধান রোপণসহ আমন আবাদে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করছেন চাষীরা। জমির মালিকরা টাকার বিনিময়ে শ্রমিক দিয়ে ও বর্গাচাষীরা নিজে অথবা শ্রমিক দিয়ে জমি চাষাবাদ কাজ করাচ্ছেন। বীজধান, সারের দাম ও শ্রমিক মজুরি সাধ্যের মধ্যে থাকলেও অনেকে বেড়েছে হালচাষ খরচ।
বৃহস্পতিবার জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া ইউনিয়নের খাশিলা হাওরসহ বিভিন্ন হাওরে দেখা যায়, আমন আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক ও শ্রমিকরা। এ সময় কৃষক এনামুল হক, আবদুস শহিদ, পবির দাস, সাজিদ মিয়া সহ অনেকে জানান, গত বছর আমনের ভালো ফলন পেয়ে এবার আরো বেশি জমি আবাদ করছি। শ্রমিক মজুরিসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণের দাম সাধ্যের মধ্যে থাকলেও হাল খরচ অনেকে বেড়ে গেছে। ফলে জমি আবাদে বেশি খরচ হচ্ছে। তারা জানান, ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় হাল খরচ অনেক বেড়ে যায়। ট্রাক্টর দিয়ে প্রতি কেদার জমি হাল দিতে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২শ টাকা লাগে। যা গত বছর ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২শ টাকা ছিল।
তবে ট্রাক্টর চালকদের মধ্যে ২/১ জন নাম প্রকাশ না করে বলেন, ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় হাল খরচ বেশি নিতে হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, ১ কেদার জমি ৪ বার করে হাল দিতে হয়। এতে অনেক ডিজেল লাগে। তার উপর ট্রাক্টর নষ্ট হলে অনেক খরচ করতে হয়। সাথে রয়েছে শ্রমিক মজুরি। সব খরচ শেষে আহামরি লাভ হচ্ছে না।
এ বিষয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ বলেন, গত বছর আমনের বাম্পার ফলন হওয়ায় এবার জমি আবাদে কৃষকরা আরো উৎসাহিত হচ্ছেন। আমরাও দরিদ্র কৃষকদের সরকারি কৃষি প্রণোদনা হিসেবে সার-বীজ সহ কৃষি উপকরণ দিয়ে সহায়তা প্রদান করছি। এছাড়া হাওর ও মাঠে ময়দানে গিয়ে জমি আবাদে পরামর্শ ও কলা-কৌশল শিখিয়ে দিচ্ছি। যাতে কৃষকরা ভালো ফলন পান। জগন্নাথপুর উপজেলায় এবার ৯ হাজার ৫৫৫ হেক্টর আমন জমি আবাদ হচ্ছে। তবে কোথাও কোথাও আরো বেশি জমি আবাদের আওতায় এসেছে। এতে লক্ষ্যমাত্রার অধিক ফলন উৎপাদনের আশা করছি।