স্টাফ রিপোর্টার ::
ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির ডিএমডি তৌহিদ হোসেন বাবুকে গ্রেফতারের দাবিতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। বাবুর বিরুদ্ধে ওই ইন্স্যুরেন্সের দুই হাজার গ্রাহকের সাড়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
রোববার সকালে শহরের ট্রাফিক পয়েন্ট এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে প্রথমে জেলা প্রশাসককের কার্যালয়ে গিয়ে জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর কাছে স্মারকলিপি হস্তান্তর করা হয় এবং পরবর্তীতে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ-এর কাছে আরেকটি স্মারকলিপি প্রদান করেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, আমরা সুনামগঞ্জ জেলার ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুারেন্স এর কো¤পানিতে ৪০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী কাজ করে আসছি। আমাদের অধীনে অত্র জেলার প্রায় ২ হাজার গ্রাহক সৃষ্টি করে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা গ্রাহকদের নিকট থেকে এনে ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোং সুনামগঞ্জ শাখার ডিএমডি তৌহিদ হোসেন বাবুর কাছে অফিসিয়াল নিয়ম অনুযায়ী হস্তান্তর করি। সে আমাদের ঊর্ধ্বর্তন কর্মকর্তা থাকায় অধিকাংশ সময়েই বিনা রশিদে আমাদের কাছ থেকে ইন্স্যুরেন্স কো¤পানির নামে টাকা জমা রেখে আসি। আমরা তার অধীনস্থ কর্মকর্তা ও কর্মচারী হওয়ায় সে আমাদের নিকট থেকে প্রায় সময়ই যারা ইন্স্যুরেন্স করেছেন সেই গ্রাহকদের টাকা বিনারশিদে গ্রহণ করেছে। তাছাড়া কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রমোশন দেওয়ার নামে আমাদের ব্যাংকের হিসাবের খালি চেক ও ১০০ টাকার স্টা¤েপ টাকার অংক না বসিয়ে স্বাক্ষর করে নিয়ে যায়। আমরা সহজ সরল মনে তা প্রদান করি। আমাদের সে বলে যে, নিয়োগ কিংবা প্রমোশন পেতে হলে কো¤পানিতে টাকার অংক ছাড়া খালি চেক ও স্টা¤েপ স্বাক্ষর দিতে হবে। কেননা গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা এনে যদি উনার কাছে জমা না দেওয়া হয়, এমন প্রমাণ পাওয়া গেলে আমাদের চেক থেকে টাকা কর্তন করা হবে। এটা অফিসিয়াল নিয়ম। সে আরও জানায় চেক ও স্টা¤প হেড অফিসে জমা দেওয়া হবে কিন্তু পরবর্তীতে তার কার্যকলাপে আমাদের নিকট প্রমাণ হয় যে, সে এতোদিন আমাদের সাথে প্রতারণা করে আসছে। এনিয়ে আমরা প্রতিবাদ করলে সে আমাদের মানহানি ও প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্ত দেয়।
স্মারকলিপিতে ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, আমরা পর¯পর জানতে পারছি যে, সে যেকোন মুহূর্তে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে পারে এবং এমতাবস্থতায় তাকে অনেক খোঁজাখোঁজি করা হলেও বর্তমানে সে পলাতক রয়েছে। তাই তাকে জরুরি ভিত্তিতে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় না আনা হলে আমাদের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং হাজারো গ্রাহকের টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হবে না। ইতিমধ্যেই আমাদের তিনজন কর্মকর্তা সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় তিনটি জিডি করেছেন। যার নং ১৮৪৮, ১৮৫২, ১৮৫০, তারিখ : ৩০-০৭-২০২৩ ইং।
ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সাবেক কর্মকর্তা সম্পা বেগম আফেন্দী বলেন, প্রতারক তৌহিদ হোসেন বাবু আমাদের সহজ-সরল পেয়ে চাকরির নাম করে বিরাট অঙ্কের প্রতারণা করেছে। সে আমাদের মাধ্যমে গ্রাহকদের ইন্স্যুরেন্স করায়। আজ সে সাড়ে ৩ কোটি টাকা নিয়ে গা-ঢাকা দিয়েছে। তার এই কা-ের জন্য গ্রাহকরা আমাদের চাপ দিয়ে যাচ্ছে টাকার জন্য। কিন্তু আমরা টাকা পাব কোথায়? সেজন্য আমরাও ঘর থেকে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এখন সব রাস্তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সে আমাদের প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে, আমরা নাকি বেশি বাড়াবাড়ি করলে সে আমাদের মেরে ফেলবে। তাই আজকে আমরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার মহোদয়ের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছি। আশা করি উনারা আমাদের ন্যায়বিচার পাইয়ে দিতে সহায়তা করবেন।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ বলেন, স্মারকলিপি পেয়েছি এবং এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ থানায় দিতে বলা হয়েছে। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।