1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩, ০৭:৪৪ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

টাঙ্গুয়ার হাওর ও যাদুকাটা নদীর পরিবেশ বিপর্যয়ে উদ্বেগ

  • আপডেট সময় রবিবার, ৬ আগস্ট, ২০২৩

স্টাফ রিপোর্টার ::
দীর্ঘদিন ধরে টাঙ্গুয়ার হাওরে ব্যাপক পরিবেশ বিপর্যয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)। তাছাড়া যাদুকাটা নদীর তীর কেটে বালু পাথর উত্তোলনের পাশাপাশি বোমা ও ড্রেজার মেশিনে বালু পাথর উত্তোলন করে সীমান্ত এই নদীটিকেও হুমকিতে ফেলা হয়েছে। গত দুই দিন ধরে টাঙ্গুয়ার হাওর ও যাদুকাটা নদী সরেজমিন পরিদর্শনে এসে এসব কথা জানিয়েছে পবা। পরিবেশ বিপর্যয় রোধে সচেতনতার পাশাপাশি প্রশাসনিক তৎপরতা কামনা করেছেন তারা।
গত ৪ ও ৫ আগস্ট দিনব্যাপী পরিদর্শন করেন পবা’র নেতৃবৃন্দ। তারা যাদুকাটা নদীর বিভিন্ন এলাকা ও টাঙ্গুয়ার হাওরের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি এলাকা পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। পরিদর্শন শেষে নেতৃবৃন্দ জানান, আমরা টাঙ্গুয়ার হাওরের গুরুত্বপূর্ণ স্পট পরিদর্শন করেছি। সংরক্ষিত এলাকায় অবাধে ঘুরে বেড়ানো পর্যটকের দল প্লাস্টিকের বর্জ্য ফেলছেন। ইঞ্জিনচালিত নৌকাও টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রাণবৈচিত্র্যের ক্ষতি করছে। প্রতিনিয়ত কমছে হাওরের মাছ, গাছ ও নানা প্রজাতির উদ্ভিদ। এভাবে ধিরে ধিরে টাঙ্গুয়ার হাওরের পরিবেশ বিপর্যয় উদ্বেগজন অবস্থায় পৌঁছেছে।
তাছাড়া টাঙ্গুয়ার হাওরের সঙ্গে সংযুক্ত সীমান্ত নদী যাদুকাটায়ও তীর কেটে বালু পাথর উত্তোলন এবং বোমা মেশিনে বালু পাথর উত্তোলনের কারণে স্থানীয়রা হুমকিতে আছেন বলে জানান নেতৃবৃন্দ।
গত ৪ আগস্ট যাদুকাটা নদী পরিদর্শনকালে নদীতীরের ভুক্তভোগীরা পরিবেশ বিপর্যয়ের কথা তুলে ধরেন। তারা সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে জানান, অবৈধভাবে বালু পাথর আহরণের ফলে ২০টি গ্রাম হুমকিতে পড়েছে। পরে যাদুকাটা নদীর পাড় কাটা বন্ধে এলাকাবাসীকে নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। এতে ভুক্তভোগীরা বক্তব্য দেন। এই প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, ঘাগটিয়া টেকেরগাঁও-এর বয়োজ্যেষ্ঠ সারুজ আলী, সাবেক ইউপি সদস্য মনির উদ্দিন প্রমুখ।
স্থানীয়রা তাদের বক্তব্যে বলেন, সা¤প্রতিক সময়ে ইজারাদারের লোকজন প্রকাশ্যে ড্রেজার মেশিন, বোমামেশিন দিয়ে নদী থেকে বালু পাথর আহরণ করছে। এতে বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট ভেঙে যাচ্ছে। প্রতিবাদ করলে ইজারাদারের লাঠিয়ালরা তাদেরকে মারধর করছে বলেও পবার নেতৃবৃন্দকে অবগত করেন স্থানীয়রা।
পরিবেশবিদদের পরিদর্শন দলটি টানা দু’দিন দু’টি নৌকয় চড়ে যাদুকাটা নদী, ঘাগরা পাড়, ঘাইট্টার পাড়, লাউড়েরগড়, টেকেরঘাট এবং টাঙ্গুয়ার হাওরের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন।
যাদুকাটার ইজারাদারদের হাতে নির্যাতিত ঘাগটিয়া আদর্শ গ্রামের গৃহিণী রাজিনা বেগম (৫০) এসময় নেতৃবৃন্দকে বলেন, নদীর পাড় কাটতে কাটতে তারা আমার বাড়ির উঠান কাটা শুরু করেছে। আমি বাধা দিলে আমার উপর হামলা করে এবং আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এতে আমি আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছি। বালু পাথরখেকোদের না থামাতে পারলে তার বসতভিটা নদীতে হারিয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করেন তিনি।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের নেতৃত্বে এই টিমে ছিলেন পবা’র সম্পাদক এম এ ওয়াহেদ, পবা’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কবি শাহেদ কায়েস, বাংলাদেশ নিরাপদ পানি আন্দোলনের সভাপতি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, পরিবেশবিদ আতিকুর রহমান খানসহ স্থানীয় পরিবেশবিদগণ।
টানা দুদিন পরিদর্শন শেষে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, নদীর পাড় কাটায় এই এলাকার পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য হুমকিতে পড়েছে। এ অপকর্ম বন্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর, হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর, পানি উন্নয়ন বোর্ড, পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে টাঙ্গুয়ার হাওরের সাম্প্রতিক পরিবেশ বিপর্যয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রাণবৈচিত্র্য ফিরিয়ে আনতে এখনই কাজ শুরু করতে হবে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com