গত শুক্রবারের (৪ আগস্ট ২০২৩) দৈনিক সুনামকণ্ঠের এক সংবাদপ্রতিবেদনে প্রকাশ, বিধি ভেঙে অর্থাৎ এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে এক প্রধান শিক্ষককে অব্যাহতি দিয়েছেন এক শিক্ষা কর্মকর্তা। সংবাদের শুরুতেই বলা হয়েছে, ‘শাল্লা উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করে রোষানলে পড়েছেন একজন শিক্ষক। এবার পার্বত্য এলাকা থেকে সদ্য স্ট্যান্ডরিলিজ হয়ে আসা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে ওই প্রতিবাদী প্রধান শিক্ষককে অব্যাহতি দিয়ে আলোচনার সৃষ্টি করেছেন। উল্লেখ্য, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ছাড়া কোনও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দায়িত্বে থেকে প্রধান শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়ার বিধি নেই।’
বুঝাই যাচ্ছে, বিষয়টা এখতিয়ারবহির্ভূত বলেই অনিয়মের এবং ক্ষমতার অপব্যবহারেরও অতিরিক্ত কর্তৃত্ববাদিতার নগ্ন প্রকাশ। প্রশাসনের অভ্যন্তরে প্রশাসনিক নিয়মের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতমূলক এইরূপ কার্যক্রম প্রকৃতপ্রস্তাবে ক্ষতিকর কর্তৃত্ববাদিতার উপস্থিতিকে নির্দেশ করছে। এই কর্তৃত্ববাদ কেবল দেশের ক্ষতি করে না, এমনকি সংশ্লিষ্টদের জীবনে অশান্তি-ভোগান্তি সৃষ্টি করতেও কসুর করে না। সবচেয়ে বড় কথা এই কর্তৃত্ববাদ দেশসেবায় নিয়োজিত হয় না কখনওই, বরং দেশের সমূহ ক্ষতিকে অনিবার্য করে তোলে বিপরীতে আত্মস্বার্থ উদ্ধারে নিমগ্ন থেকে দেশ-রাষ্ট্র-জনগণের সম্পদ আত্মসাতকে একমাত্র ব্রত করে তোলে। মানুষের পক্ষে অমানুষ হয়ে উঠার এর চেয়ে বড় কোনও অপকর্ম অর্থাৎ প্রকৃতপ্রস্তাবে অপরাধ হতে পারে না। কারও কারও মতে বাংলাদেশ বর্তমানে স্বজনপোষণের রাজনীতিক ছত্রছায়ায় এইরূপ অনিয়ম তথা বিধি লঙ্ঘনের স্বর্গরাজ্যে পর্যবসিত হয়েছে এবং বিধি ভঙ্গের ব্যাপক তা-ব যাচ্ছেতাইভাবে চলতে থাকলে প্রশাসনের কীছু যায় আসে না, বরং লাভের গুড় ভক্ষণের মচ্ছব আরও আরও চমৎকারিত্ব লাভ করে। প্রশাসনের উচ্চাসনে থেকে নি¤œাসনে আসীনদের প্রতি এইরূপ প্রশাসনিক অপব্যবহারের নির্মূলীকরণ চাই। ক্ষমতার এমন বিধিলঙ্ঘনপূর্বক ব্যবহার যে-কোনও বিবেচনায় অবশ্যই অনভিপ্রেত। আশা করছি অচিরেই ঊর্ধ্বতনের দ্বারা অধঃস্তনের উপর এইরূপ অবিবেচনাপ্রসূত ও বিধিবহির্ভূত কর্মকা-ের বিচারান্তে বিহিত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।