সাবেক কর্মকর্তা বাবুর বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযো
স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জে ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কো¤পানির সাবেক এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও গ্রাহকদের প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠেছে। সোমবার দুপুরে সুনামগঞ্জ পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কো¤পানীর সাবেক ডিএডি তৌহিদ হোসেন বাবুর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন কো¤পানির সাবেক কর্মকর্তা সম্মা বেগম আফিন্দী, জাহানারা বেগম ও রহিমা বেগম।
সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, কিছুদিন আগে আমরা এই শহরের ট্রাফিক পয়েন্টে মানববন্ধন করেছি ওই প্রতারক তৌহিদ হোসেন বাবুকে নিয়ে। সেই তৌহিদ হোসেন বাবু ২০১৪ সাল থেকে ডায়মন্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্সে কাজ করায় সুবাধে ২০১৫ সালে আমরা ৪০ জন নারী কর্মী একসাথে ওই প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদে নিয়োগ পাই, এই বাবু আমাদের নিয়োগ দেয়ার সময় জরুরি কাগজ হিসেবে একটি খালি স্টা¤প ও একটি খালি চেক দিতে হয় এবং বর্তমানে ওই খালি চেক ও স্টা¤েপ নিজের মনগড়া টাকার পরিমাণ বসিয়ে আমাদের নামে আদালতে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে যাচ্ছে এবং প্রতিনিয়ত তার কাছে গ্রাহকদের টাকা ফেরত চাইলে আমাদের প্রাণে মেরে ফেলে দেয়ার এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। গ্রাহকদের টাকার পীড়ায় আমাদের সমাজে বসবাস করাও কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে আমাদের দায়িত্ব দেয়া হয় ইন্স্যুরেন্স করানোর। যেটিকে একটি টার্গেট দেয়া থাকতো সেটি পূরণ করার। যার জন্য আমাদের কোন বেতন দেয়া হতো না। প্রতি ইন্স্যুরেন্সে কমিশন আকারে আমাদের প্রদান করা হতো। তখন কর্মী নিয়োগ দেয়া হলে আমাদের বলা হতো বাধ্যতামূলক ইন্স্যুরেন্স করার নির্দেশনা দেয় তৌহিদ হোসেন বাবু। এছাড়া সেই বিভিন্ন আয়োজন, বনভোজন এবং প্রমোশন পাইয়ে দেয়ার নাম করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এমনকি ২০১৭ সালে ওই প্রতারক তৌহিদ হোসেন বাবু কক্সবাজারের বনভোজনের নাম করে ১২ হাজার টাকা করে চাঁদা তুললেও সেই বনভোজন না নিয়ে উল্টো আমাদের উপর আরও টার্গেট চাপিয়ে দেয়। সেই টার্গেট পূরণ করা হলেও প্রতারক ডায়মন্ড লাইফ ইন্সুরেন্সের সিনিয়র সহকারী ব্যবস্থাপক তৌহিদ হোসেন বাবু আমাদের বনভোজনে না নিয়ে আমাদের টাকাও আত্মসাৎ করে ফেলে। এছাড়া তৌহিদ হোসেন বাবু আমরা যারা কর্মরত ছিলাম তাদের প্রত্যেককে চাকরিতে প্রমোশন পাইয়ে দেওয়ার নাম করে আমি স¤পা বেগম, জাহানারা বেগম এবং রহিমা বেগমের কাছ থেকে ২৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ভুক্তভোগীরা বলেন, তৌহিদ হোসেন বাবুর প্রতারণার শিকার শুধু ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা নয়, সে ডায়মন্ড লাইফ ইন্সুরেন্সে আমাদের মধ্য দিয়ে ইন্স্যুরেন্স করা প্রায় ২ হাজারের অধিক নারী পুরুষ প্রতারণার শিকার হয়েছে। সেই এসকল গ্রাহকের ইন্স্যুরেন্সের টাকায় যা হবে সাড়ে ৩ কোটি টাকা নিয়ে সে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরি ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তার এই কা-ের পর থেকে আমাদের সাথে সে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় এবং ইন্স্যুরেন্সের টাকার জন্য গ্রাহকরা এখন আমাদের চাপ দিলেও ওই প্রতারক তৌহিদ হোসেন বাবু উল্টো এসব নিয়ে কথা বললে আমাদের প্রাণে মেরে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। আমরা গ্রাহকের ৩ বছরের টাকা একসাথে দিলেও প্রতারক বাবু আমাদের মাত্র ১ বছরের রশিদ প্রদান করে কিন্তু অর্ধেকের উপরে গ্রাহকদের টাকার রশিদ সে আমাদের দেয়নি।
ভুক্তভোগীরা আরও বলেন, এই তৌহিদ হোসেন বাবুর অত্যাচার থেকে আমরা মুক্তি চাই। সে আমাদের বিপদে ফেলে আজ পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আমরা আপনাদের কাছে অনুরোধ জানাতে চাই আপনারা আপনাদের লেখনির মধ্য দিয়ে তৌহিদ হোসেন বাবুর অপকর্মগুলো তুলে ধরুন এবং আমাদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তিতে সহায়তা করুন।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে তৌহিদ হোসেন বাবুর মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তিনি কল রিসিভ করেননি।