স্টাফ রিপোর্টার ::
শান্তিগঞ্জে সপ্তম শ্রেণির স্কুলছাত্রী রাজনা আক্তারকে হত্যা করে হাত-পা ভেঙে বস্তাবন্দী করে সড়কে ফেলে দেওয়ার নির্মম ঘটনার পর আসামিদের খুঁজে বের করতে না পারায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ এলাকার হাজারো জনতা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। শিক্ষার্থীরা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খুনীদের খুঁজে বের করার আল্টিমেটাম দিয়েছে।
বুধবার সকাল ১১টায় দিরাই-মদনপুর সড়কের পাথারিয়া বাজারে সড়ক অবরোধ করে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে অবিলম্বে খুনীদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। মানববন্ধন কর্মসূচিতে সুরমা স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীসহ আশপাশের প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীরা এবং সাধারণ জনতাও অংশ নেন। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ চলাকালে দিরাই-মদনপুর সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
চারদিন অতিবাহিত হলেও এখনো খুনীদের চিহ্নিত করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে ওই ছাত্রীর রিকসাচালক বাবা, বোনসহ পরিবারের স্বজনরা এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় হৃদয়বিদারক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য দেন সুরমা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম, শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক নূর হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান দুলন রাণী তালুকদার, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল মুমিন, ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
মানববন্ধন চলাকালে রাজনা আক্তারের বাবা হতদরিদ্র ইসরাইল মিয়া হাউমাউ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, আমি রিকসা চালিয়ে কষ্ট করেও আমার চার মেয়েকে পড়ালেখা করাচ্ছিলাম। কারো সঙ্গে আমার বিরোধ নেই। খুনীরা আমার মেয়ের হাত পা-ভেঙে খুন করে বস্তায় ভরে ফেলে লাশ ফেলে গিয়েছে। তারা যেভাবে আমার মেয়েকে খুন করেছে ঠিক তাদেরও এমন শাস্তি চাই।
রাজনা আক্তারের বোন শিপা আক্তার মানববন্ধনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, রাজনা পড়ালেখা করে পুলিশ হতে চাইছিল। পাষ-রা তাকে নির্মমভাবে খুন করেছে। আমরা খুনীদের কঠোর শাস্তি চাই।
মানববন্ধনে রাজনা আক্তারের সহপাঠী সুরাইয়া আক্তার ও নীলিমা আক্তার জানান, খুব ভালো মেয়ে ছিল রাজনা। তাকে নির্মমভাবে যারা খুন করেছে তাদের কঠিন শাস্তি দিতে হবে। চারদিন হলেও পুলিশ তাদের ধরতে না পারায় আমরা পুলিশের ভূমিকা নিয়েও সন্দিহান। আমরা অবিলম্বে খুনীদের খুঁজে বের করে কঠিন শাস্তির দাবি জানাই।
উল্লেখ্য, গত ২২ জুলাই সন্ধ্যায় দিরাই সড়কের শরীফপুর এলাকায় রাজনা আক্তারের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় এখনো আসামিদের চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ। তবে ঘটনার পরদিন নিহতের বাবা ইসরাইল মিয়া অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে শান্তিগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।