সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৪০টি শিশু মর্মান্তিকভাবে পানিতে ডুবে মারা যায় বলে জানিয়েছে শিশুদের নিয়ে কাজ করা সংস্থা ইউনিসেফ। সংস্থাটি জানিয়েছে, বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হলো পানিতে ডোবা। প্রতি বছর এই দেশে পানিতে ডুবে ১৪ হাজার শিশুর মৃত্যু হয়।
ইউনিসেফ জানিয়েছে, কিছু সহজ পদক্ষেপ নিলে শিশুদের ডুবে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব। ছোট শিশুদের নজরে রাখা বিশেষ করে যখন তারা পানির আশপাশে থাকে, উন্মুক্ত জলাশয়ের চারপাশে বেড়া দেওয়া এবং পানির যেকোনও বড় পাত্র ঢেকে রাখা। পাশাপাশি সন্তানের বয়স ছয় বছর হলেই তাকে সাঁতার শেখানো।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক যে এত শিশু কেবল পানিতে ডোবার মতো দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে; যা কিনা সহজেই প্রতিরোধ করা সম্ভব। বাবা-মা ও কমিউনিটির সদস্য হিসেবে আমাদের সকলের দায়িত্ব এ বিষয়ে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রতিনিধি ড. বারদান জাং রানা বলেন, এমন একটি বিশ্ব, যেখানে ডুবে যাওয়ার ঝুঁকি যে কাউকে গ্রাস করতে পারে; সেখানে আমাদের প্রত্যেকের জন্য পানি সংক্রান্ত দুর্ঘটনা হতে সুরক্ষার দায়িত্ব নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।
ডব্লিউএইচওর ‘গ্লোবাল রিপোর্ট অন ড্রাউনিং: প্রিভেনটিং এ লিডিং কিলার’ শীর্ষক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, এই অঞ্চলে পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার এখনও বৈশ্বিক গড়ের চেয়ে অনেক বেশি, পুরুষ ও নারী উভয় ক্ষেত্রে এবং বয়সভিত্তিক প্রতিটি গ্রুপের ক্ষেত্রেও। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে পানিতে ডুবে যাওয়াকে ১০-১৪ বছর বয়সী শিশুদের মৃত্যুর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কারণ, পাঁচ থেকে ৯ বছর বয়সী শিশুদের জন্য তৃতীয়, ১৫-২৪ বছর বয়সীদের জন্য ষষ্ঠ এবং পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য সপ্তম সর্বোচ্চ কারণ হিসেবে পাওয়া গেছে।
শিশুদের পানিতে ডুবে মৃত্যু রোধে একটি সচেতনতামূলক ভিডিও প্রকাশ করেছে ইউনিসেফ। ভিডিওতে পানিতে ডুবে মৃত্যু রোধে বার্তা দিয়েছেন ইউনিসেফের জাতীয় দূত ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। কীভাবে শিশুদের ডুবে যাওয়া থেকে নিরাপদ রাখা যায়, সে সম্পর্কে বাবা-মায়েদের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ২ কোটি ২০ লাখেরও বেশি বার দেখা হয়েছে।