স্টাফ রিপোর্টার ::
‘নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদ্বোধন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের এমপি পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ। তিনি বলেন, এখন বিশ্বে মৎস্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। সেই হিসাবে আমাদের প্রচুর মাছ উৎপাদন হচ্ছে।
পীর মিসবাহ বলেন, এক সময় সুনামগঞ্জের মানুষ চাষের মাছ কিনতেন না। এখন গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও দেখা যায় দিনের কাজ শেষে বিকেল বেলা বাড়ি ফেরার সময় চাষের মাছ অথবা ফার্মের সাদা মোরগ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। এতে বুঝা যায় আমাদের কাক্সিক্ষত মাছ উৎপাদন হচ্ছে না। দেশীয় মাছ এখন প্রায় ধ্বংস। দেশীয় মাছের আকাল দেখা দিয়েছে।
তিনি বলেন, নদী, খাল-বিলে ঘন জাল, অবৈধ কারেন্টের জাল ব্যবহার বন্ধ করতে হবে নিজেদের উদ্যোগে। এই জালে জলাশয়ে থাকা মাছের খাবারও ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নদীতে রক্ষিত মাছের অভয়াশ্রম পর্যন্ত পেশীশক্তির মানুষকে দিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে। এটা মৎস্যজীবীদের কারণে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, উন্নয়ন স্কিমের আওতায় যারা জলমহাল ইজারা নিয়ে আসেন, শর্ত থাকে জলমহাল যেন খনন করা হয়। কিন্তু ইজারাদারগণ তা করেন না।
সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা মৎস্য অফিসার মো. সামছুল করীম। তিনি বলেন, ২৪ থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত চলবে মৎস্য সপ্তাহ। এই মৎস্য সপ্তাহ সফল করতে সকলের সহযোগিতা চাই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজন কুমার দাস।
সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা প্রশান্ত দে-এর পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রাণিস¤পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আসাদুজ্জামান, সাংবাদিক কুলেন্দু শেখর দাস, মৎস্যজীবী প্রতিনিধি আলাউর রহমান।
আলোচনা সভা চলাকালে ৩ জন সফল মৎস্যজীবীকে ক্রেস্ট তোলে দেন অতিথিরা। তারা হলেন সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের লালপুর গ্রামের সোহেল রানা, দিরাই পৌরসভার সুজানগর গ্রামের ইকবাল হোসেন চৌধুরী, শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের পার্বতীপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান।
সভার শুরুতে কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাও. তাজুল ইসলাম, গীতা থেকে পাঠ করেন অমিত চক্রবর্তী।
জেলা প্রশাসন ও মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানের আলোচনা সভার আগে পায়রা অবমুক্ত করে এবং বেলুন উড়িয়ে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন অতিথিবৃন্দ। পরে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে র্যালি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে।