গত রোববার (২৪ জুলাই ২০২৩) যাদুকাটা নদীর তীর কেটে বালু উত্তোলনের দায়ে দুইজনকে আটক করে তাহিরপুর থানায় তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হলে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। অবৈধ উপায়ে যে-কোনও কাজ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। নদী থেকে বালু উত্তোলন বা কোনও একটি খাল অথবা সরকারি জমি দখল করা করা তেমনি অপরাধ হিসেবে গণ্য। কিন্তু আমাদের দেশে আইন প্রয়োগে প্রশাসনিক গাফিলতি ও দুর্নীতিচর্চার ফাঁকে বিভিন্ন অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জনের লোভে এবংবিধ কাজ করতে কীছু সংখ্যক লোক কখনওই কসুর করে না এবং প্রকারান্তরে ব্যক্তিগত সম্পদ বৃদ্ধির চরকায় তেল দিতে ব্যস্ত থাকে। কোনও কোনও বিশেষজ্ঞের অভিমত এই যে, তারা প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়সহ সর্বস্তরের লোকদের মধ্য থেকে তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট লোকজনদের নিয়ে চক্র গড়ে তোলে এবং সমাজের সর্বত্র লুটপাটের কার্যক্রম চালায় এবং প্রকারান্তরে অর্থনীতি রাজনীতি ও সাংস্কৃতিক স্তরের সর্বত্র দুর্নীতিকে বিস্তৃত করে স্বজনপোষণের (ক্রোনিজম) রাজনীতিক অর্থনীতির বিস্তার ঘটিয়ে চলেছে। এই স্বজনপোষণনীতির আওতায় পুকুর, নদী, খাল, বিল দখল হয়ে যায়, নদীর বালু উত্তোলন হতেই থাকে, বনের বৃক্ষ কর্তন চলে, পাহাড় কাটা বাদ যায় না। অথচ এইসব অবৈধ কাজের প্রতিরোধ, প্রতিকারের আইন দেশে বিদ্যমান থাকার পরও সেগুলোকে প্রয়োগ করা হয়নি এবং প্রকারান্তরে সংরক্ষণের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা অর্পিত দায়িত্ব এড়িয়ে চলার সংস্কৃতিচর্চায় নিমগ্ন থেকেছে, দেশে দুর্নীতি বেড়েছে উত্তরোত্তর।
বিদগ্ধমহলের অভিমত এই যে, নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন বা খাল উদ্ধারের ঘটনাকে থেকে স্থায়ীভাবে উদ্ধার পেতে হলে স্বজনপোষণের আর্থরাজনীতিক ব্যবস্থার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসতে হবে সরকার, প্রশাসন ও দেশের মানুষকে। প্রয়োজনে সমাজসংস্থিতির বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করতে হবে, ব্যর্থ হলে চলবে না।