গত বৃহস্পতিবারের (২০ জুলাই ২০২৩) দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, ‘তোপের মুখে তাহিরপুর থানার ওসি’। সঙ্গে ‘মাহারাম ও যাদুকাটা নদীতে ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন’ এইরূপ বাক্যবন্ধ সন্নিবেশিত করে সংবাদের তাৎপর্যবর্ধক একটি উপশিরোনামও করা হয়েছে এবং প্রতিবেদনের বিবরণীর একস্থানে লেখা হয়েছে, ‘রাতের আঁধারে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনকালে থানার দারোগা ব্যাগ হাতে নিয়ে টাকা তুলেন। বালি উত্তোলন সিন্ডিকেটের সাথে যদি তাহিরপুর থানা পুলিশের একাত্মতা না থাকতো তাহলে এ কাজ কখনোই সম্ভব হতো না।’ বিদগ্ধমহলের ধারণা, এর চেয়ে খাঁটি কথা আর হতে পারে না।
ইতোমধ্যে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ব্যাপারে পত্রিকান্তরে বেশ ঢালাও করে প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে দেখা গেছে কিন্তু প্রতিকারের তৎপরতা প্রত্যাশিত ফল লাভের পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে নি। বরং বিভিন্ন প্রয়াসের অন্তরালে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কার্যক্রমটি বহাল থেকেছে এবং প্রকারান্তরে এর (অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের) পেছনে প্রশাসন, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী এই তিন সমাজনিয়ন্ত্রক শ্রেণির কতিপয় দুষ্ট প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত চক্রের যৌথ তৎপরতার উপস্থিতিকে প্রতিপন্ন করছে। অর্থাৎ দেশের অন্যান্য স্থানের মতো স্বজনপোষণের (ক্রোনিজম) রাজনীতির চর্চা হচ্ছে সুনামগঞ্জেও। এর প্রতিকার অবশ্যই কাম্য এবং সে-প্রত্যাশা দেশে শোষণ-নিপীড়ন বিরোধী রাজনীতির সঞ্চার প্রবল ও কার্যকরভাবে দৃশ্যমান না হলে কখনওই সম্ভব নয়। শোষণবিরোধী রাজনীতির প্রত্যাশা অবশ্যই রইল। কিন্তু তার আগে আপাতত প্রতিষ্ঠিত প্রশাসন, রাজনীতি ও ব্যবসায়ব্যবস্থাপনার কাছে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন আপাতত বন্ধ করার আহ্বান জানাচ্ছি। তারাই কেবল পারেন সকল প্রকার অবৈধ কর্মকা- বন্ধ করতে।