সুনামগঞ্জ থেকে খাগড়াছড়িতে স্ট্যান্ডরিলিজ :
ঝুলে আছে সেই শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রহমানের যোগদান
স্টাফ রিপোর্টার ::
দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে সুনামগঞ্জ থেকে খাগড়াছড়ি স্ট্যান্ডরিলিজ হয়ে যাওয়া সুনামগঞ্জের সাবেক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম আব্দুর রহমানকে গ্রহণ করছে না খাগড়াছড়ি প্রাথমিক শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। সেখানকার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তার বদলে সাবেক শিক্ষা কর্মকর্তা সাহাব উদ্দিনকে রাখতে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন। অন্যদিকে স্ট্যান্ডরিলিজ হয়ে বদলি হওয়া এসএম আব্দুর রহমানও সুনামগঞ্জে ফের আসার জন্য তদবির শুরু করেছেন। স্ট্যান্ডরিলিজ ফেরাতে আদেশের পরই তিনি নানা জায়গায় তদবির করে ব্যর্থ হয়ে ঈদের পরে খাগড়াছড়িতে চলে যান বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষক। তবে এখনো তাকে যোগদান করতে দেননি খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী। তার বদলে এই জেলার সাবেক শিক্ষা কর্মকর্তা সাহাব উদ্দিনকে সেখানে রাখতে চান তিনি।
জানা গেছে, গত ১৪ জুন সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এসএম আব্দুর রহমানকে নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্ট্যান্ডরিলিজ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বদলির আদেশে ১৮ জুন যোগদানের নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু গত ২২ জুন তিনি সুনামগঞ্জ থেকে চলে যান। ৫ জুলাই তিনি খাগড়াছড়িতে যান। যোগদানের জন্য গেলেও তাকে যোগদান করতে দেওয়া হচ্ছেনা। এখনো ঝুলে আছে তার যোগদান।
সুনামগঞ্জে দায়িত্ব পালনকালে এসএম আব্দুর রহমান গত ডিসেম্বর মাসে প্রায় সাড়ে ৮ শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের পদায়ন নিয়ে চরম দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। মন্ত্রণালয়ের বিধি ভেঙ্গে ৫০ জনের নিচে শিক্ষার্থী আছে, আছে অতিরিক্ত শিক্ষক এমন বিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষক পদায়ন করেছেন। দুর্গম এলাকা বঞ্চিত করে যোগাযোগ উন্নত এলাকায় গণহারে পদায়ন করেছেন। নিয়ম বহির্ভূতভাবে চলতি দায়িত্বের প্রধান শিক্ষকদের বদলি করেছেন এবং যারা যোগ্যতা অর্জন না করে অবসরে গেছে তাদেরকে আইন ভঙ্গ করে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে পেনশন প্রদান করেছেন। এখন পেনশন পেলেও তারা ভাতা পাচ্ছেনা। এছাড়াও শিক্ষক নিয়োগের সময় ভাইভাতে বেশি মার্কস দিবেন জানিয়ে অফিসের একটি চক্র ও বিভিন্ন এলাকার কতিপয় শিক্ষক নেতাদের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা নিয়েছিলেন বলে একাধিক অভিযোগ আছে। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে যাচ্ছেনা এমন শিক্ষকদের তালিকা করে মাসোহারা আদায় এবং নিয়ম ভঙ্গ করে অনলাইন বদলি করে সমালোচিত হয়েছেন এসএম আব্দুর রজমান। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান লিখিত অভিযোগও করেছিলেন। এসব অভিযোগ আমলে নিয়েই মন্ত্রণালয় তাকে স্ট্যান্ডরিলিজ করেছিল।
খাগড়াছড়ি থেকে সুনামগঞ্জে বদলি হয়ে আসা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, আমাকে খাগড়াছড়িতে রাখতে চান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান স্যার। তিনি আমার কাজে সন্তুষ্ট হয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন। এতে আমার কোনও হাত নেই।
এসএম আব্দুর রহমানের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি কল ধরেননি।
খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, সাহাব উদ্দিন সাহেব আমাদের এখানে ভালো কাজ করেছেন। তারও আগ্রহ ও ইচ্ছে আমাদের ওখানে থাকার। তাই আমি তাকে রাখার জন্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছি।