স্টাফ রিপোর্টার ::
শান্তিগঞ্জে মসজিদে দান করা কাঁঠাল নিলামকে কেন্দ্র করে একই গ্রামের দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে চারজন খুনের ঘটনার ৬দিন অতিবাহিত হলেও এখনো মামলা দায়ের করেনি কোন পক্ষ। আইন অনুযায়ী পুলিশ বাদী হয়ে মামলার নিয়ম থাকলেও পুলিশও মামলা দায়ের থেকে বিরত রয়েছে। এ ঘটনায় আদৌ মামলা হবে কি না তাও বলতে পারেনি পুলিশ। তবে ঘটনার দুইদিন পর আহত একজন চিকিৎসা নিতে এসে যাবার অটোরিকসায় দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গত ৭ জুলাই (শুক্রবার) শান্তিগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ গ্রামের মালদার আলী ও দ্বীন ইসলাম পক্ষের লোকদের মধ্যে মসজিদে দান করা কাঁঠালের নিলাম নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে গত ১০ জুলাই দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে দ্বীন ইসলাম পক্ষের নজরুল ইসলাম ও বাবুল মিয়া এবং মালদার আলী পক্ষের শাহজাহান মিয়া নামের আরেকজন খুন হন। ঘটনার দু’দিন পর সংঘর্ষে মালদার আলীর পক্ষের আহত মুখলেছুর রহমান চিকিৎসা নিতে এসে অটোরিকসা দুর্ঘটনায় পরে আত্মীয়-বাড়ি গিয়ে মারা যান বলে জানায় পুলিশ। উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছিলেন। তবে সংঘর্ষের পর দুই পক্ষের পুরুষরা এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন। নারী ও শিশুরা বাড়িতে থাকলেও তারাও আতঙ্কে আছেন।
জয়কলস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত সুজন বলেন, দুটি পক্ষের মধ্যে অন্তত চার দশকের গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব ছিল। তারা নানা সময়েই এভাবে দাঙ্গাহাঙ্গামা ও মামলায় জড়িয়েছে। এবার মসজিদের কাঁঠাল নিলাম নিয়ে তুচ্ছ ঘটনায় খুনোখুনির ঘটনা ঘটেছে। তবে পুরুষরা এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ায় কোনও পক্ষই এখনো মামলা দায়ের করেনি।
সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট পঙ্কজ তালুকদার বলেন, ৬ দিন হয়ে গেছে এতবড়ো একটি ঘটনা ঘটলো। এখনো কেউ মামলা দায়ের করেনি। তবে পুলিশ মামলার বাদী হতে আইনগত বাধা নেই। বরং বাদী মামলা করলেও খুনের মামলার পক্ষ আসলে রাষ্ট্রই। তাই কেউ মামলা না করলে পুলিশ বাদী হয়েই মামলা করা উচিত।
শান্তিগঞ্জ থানার ওসি খালেদ চৌধুরী বলেন, আমরা অপেক্ষা করছি মামলার জন্য। কোন পক্ষই মামলা করতে আসছেনা। পুলিশ কেন বাদী হয়ে মামলা নিচ্ছেনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি একটি বড়ো ঘটনা এবং দুই পক্ষেরই লোকজন আছে। রাষ্ট্র মামলার করার সুযোগ থাকলেও বাদীর মামলা করাটাই ভালো।