স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধোপাজান-চলতি নদীতে অবৈধভাবে ড্রেজার ও বোমা মেশিন দিয়ে বালু-পাথর উত্তোলনের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ধোপাজান-চলতি নদীর ডলুরা এলাকায় গিয়ে সরজমিনে পরির্দশন শেষে অবৈধভাবে বালু পাথর উত্তোলন এবং নদীর পাড় কেটে নেয়ার প্রাথমিক সত্যতাও পেয়েছেন পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগের সহকারী পরিচালক মোহাইমিনুল হক। তবে দীর্ঘদিন ধরে সরকারিভাবে বালু ও পাথর মহালটি বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা বেকার থাকায় অবৈধভাবে এসব কাজ বেশি হচ্ছে বলে জানান পরিবেশ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা।
সরেজমিনে পরিদর্শনে দেখাযায়, সুনামগঞ্জের সবচেয়ে বড় বালু-পাথর মহালটি সরকারিভাবে ইজারা দেয়া না হলেও ড্রেজার দিয়ে চলছে বালু উত্তোলন, সেই সাথে নদীর পাড় কেটে বালু আহরণ করছে সিন্ডিকেটের সদস্যরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, এখানে প্রতিদিন ড্রেজার দিয়ে বালু তোলা হয়। কিন্তু কেউ সাহস করে সত্যটা বলে না। প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই নিলামের নামে এখানে এসব কাজ চলে। তবে আপনি গ্রামের যে কারো সাথে কথা বলুন সবাই বলবে এখানে ড্রেজার চলে না। কারণ ওই মহলটা এতোই শক্তিশালী যে সবাই তাদের ভয় পায়।
ডলুরা দক্ষিণ গ্রামের বাসিন্দা মোবারক আলী বলেন, প্রায় ৫ বছর ধরে এখানে সরকারিভাবে ইজারা দেয়া বন্ধ করা হয়েছে। কাগজে-কলমে এখান থেকে কোনো বালু বা পাথর উত্তোলনের সুযোগ না থাকলেও প্রতিদিন লুকিয়ে সিন্ডিকেটের সদস্যরা বালু পাথর তুলছে। যদি সরকার এই কোয়ারিটা খুলে দিতো তাহলে অনেক শ্রমিক তাদের সংসার চালাতে পারতো। এখন অবৈধভাবে এসব কাজ করলেও মাঝেমধ্যেই পুলিশ বা বিজিবি এসে তাদের আটক করে নিয়ে যায়। তাই আমরা চাই ধোপাজান-চলতি নদীটা যেন শ্রমিকদের জীবিকার কথা চিন্তা করে খুলে দেওয়া হয়।
পরিদর্শন শেষে পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগের সহকারী পরিচালক মোহাইমিনুল হক বলেন, এই ধোপাজান-চলতি নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার ও বোমা মেশিন দিয়ে নদীর পাড় কেটে বালু উত্তোলন হচ্ছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আমার এখানে আসা। এখানে এসে আমি প্রাথমিকভাবে ড্রেজার মেশিন চালানোর সত্যতা পেয়েছি। আমরা এখানে এসে জানতে পেরেছি দীর্ঘদিন ধরেই এখানে বালু পাথর উত্তোলন বন্ধ আছে। যার কারণে বেকার শ্রমিকরা পেটের দায়ে এসব কাজ করে যাচ্ছেন। এখানে এখানে নদীর পাড় কেটে যে অবস্থা করা হয়েছে সেটি ভবিষ্যতের জন্য হুমকি স্বরূপ। তাই আমি প্রতিবেদন তৈরি করে দায়িদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে মামলা করবো। একই সাথে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।