1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ১১:৫৭ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

আর্থনীতিক উন্নয়নের সঙ্গে সাংস্কৃতিক উন্নয়নও অপরিহার্য

  • আপডেট সময় শনিবার, ২০ মে, ২০২৩

১৯৪৭-এর পর ২৩ বছরের পাকিস্তানি ঔপনিবেশিকতার মোহাচ্ছন্ন তন্দ্রাঘোর থেকে বাংলাদেশ বেরিয়ে এসেছিল দীর্ঘ তেইশ বছরে এবং ১৯৭১-এ বাংলাদেশ স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে এসেছে দু’বছর আগে। এই সময়টা একটা দেশকে অগ্রসর করে নেওয়ার জন্যে কম নয়, বরং পর্যাপ্ত সময়। দেশ এগিয়ে গিয়ে অনুন্নত থেকে ‘উন্নয়নশীল’ হয়ে গেছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই, সকলেই স্বীকার করেন এবং এও স্বীকার করেন যে, এই অগ্রসরতার মধ্যে ধনবৈষম্যের দূষণের রক্তক্ষরণ প্রকৃতপ্রস্তাবে ভেতরে ভেতরে একধরনের অনুন্নয়নকেই প্রতিপন্ন করছে। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এই তো ক’দিন আগেই বললেন, দেশে ‘দরিদ্ররা বঞ্চিত’। এই বঞ্চনা আর্থনীতিক। এই আর্থনীতিক বঞ্চনার তলে একটি সাংস্কৃতিক বঞ্চনাও আছে। সেটা মুগল কিংবা ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে পাকিস্তান আমলে যেমন ছিল, তেমনি বর্তমানে বাংলাদেশ আমলেও প্রবলাকারে বহমান। সাংস্কৃতিক উন্নয়নের জন্যে যে চেষ্টা হয় নি এমন নয়, হয়েছে। কিন্তু তার শুরুর ব্যাপক তোড়জোর ও আড়ম্বরতা স্থিমিত হয়ে পড়েছে অচিরেই। দৃষ্টান্ত দিচ্ছি। গত বৃহস্পতিবার (১৮ মে ২০২৩) দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি সংবাদ শিরোনাম ছিল, ‘ধর্মপাশা উপজেলা শিল্পকলা একাডেমি : ২৪ বছর ধরে কার্যক্রম বন্ধ।’ এবং প্রতিবেদেনের শুরুতে লেখা হয়েছে, ‘শুধু কাগজে কলমে নাম রয়েছে হাওরবেষ্টিত ভাটির জনপদ খ্যাত ধর্মপাশা উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির। কিন্তু দুর্গম এই হাওরের শিল্পকলা একাডেমির কার্যক্রম নেই ২৪ বছর ধরে। প্রশাসনের অনাগ্রহ আর দায়িত্বহীনতা, দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না থাকাসহ নানা কারণে শিল্পকলা একাডেমির কার্যক্রম চালু হচ্ছে না। এতে […] শিল্প সংস্কৃতি চর্চা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বাসিন্দারা।’ এর পাশাপাশি আর একটি সংবাদ পরিবেশন করেছেন প্রতিবেদক। সাংস্কৃতিক কর্মকা- স্থগিত করে রাখা হলেও স্থগিত হয়নি শিল্পকলার কাজের নামে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিকদের অর্থস্বার্থ লুণ্ঠনের কর্মকা-। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিল্পকলার কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও থেমে থাকে নি সরকারি বরাদ্দে মেরামত, চালের টিন পরিবর্তন ও রঙ করার কাজ।’ পরিণতির দিকটিও বাদ যায় নি, লেখা হয়েছে, ‘স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ২০১৬ সালের দিকে এটি একটি গণশৌচাগারে পরিণত হয়েছিল।’ বুঝুন এবার ব্যাপারটা।
অর্থাৎ সার্বিক বিবেচনায় এ কথা বলা বোধ করি অসঙ্গত হবে না যে, উন্নয়নের খোলসের ভেতরে ধনবৈষম্যের মতো উন্নয়নবঞ্চনা যেমন দেশের অর্থনীতির রক্তপ্রবাহের মধ্যে বহমান তেমনি সাংস্কৃতিক বঞ্চনাও বহমান দেশের কেন্দ্র থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত। একটি দেশ কিংবা কোনও জাতি আর্থনীতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে সাংস্কৃতিক উন্নয়নে সফল হতে না পারলে তার আর্থনীতিক উন্নয়ন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে বাধ্য। এই ব্যর্থতার প্রতিক্রিয়া ইতোমধ্যে বাংলাদেশ প্রকট হয়ে উঠেছে। এখানে পুঁজির প্রভুত্ব, আমলাতান্ত্রিক দৌরাত্ম্য, জবাবদিহিতার অভাব, আত্মসাৎ, বিদেশে সম্পদ পাচার, ঘুষ, দুর্নীতি, অনিয়ম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, মাদকব্যবসা, চাঁদাবাজি, জমি-বাড়ি-চর-নদী-ফুটপাত দখল, ফড়িয়া ব্যবসা, জালিয়াতি, বাটপারি, প্রতারণা, ছিনতাই, পণ্যে ভেজাল মিশ্রণ, শিক্ষা-চিকিৎসার অমানবিক বাণিজ্যায়ন, খুন, ধর্ষণ ইত্যাদির প্রাবল্য ও অপ্রতিরোধ্য প্রসার সে-ব্যর্থতার মূর্তনির্দিষ্ট প্রমাণ। এই ব্যর্থতাকে অবশ্যই প্রতিরোধ করতে হবে এবং ভুলে গেলে চলবে না যে, কেবল সাংস্কৃতিক উন্নয়নকে নিশ্চিত করেই সে-ব্যর্থতা থেকে উত্তরণ সম্ভব। সুতরাং দেশের যেখানে যতোগুলো শিল্পকলা একাডেমি আছে সে-গুলোতে কার্যক্রম শুরু করা হোক। সাংস্কৃতিক উন্নয়ন না হলে কেবল আর্থনীতিক উন্নয়ন মানুষের শান্তি-সুখ ও শারীরিক-মানসিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না।

 

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com