1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ০১:৩৯ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

দরিদ্রজনের বঞ্চনা নিরসনের পদ্ধতি প্রসঙ্গে

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০২৩

গত সোমবার (১৫ মে ২০২৩) বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও নাগরিক প্লাটফর্ম আয়োজিত সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। সেখানে তিনি প্রসঙ্গক্রমে বলেছেন, ‘দরিদ্ররা বঞ্চিত’। ব্যক্তিমালিকানা সঞ্জাত প্রভুদের পতাকাতলে অর্থাৎ পুঁজির পদতলে পিষ্ট পৃথিবীর ইতিহাসে কথাটি কোনও নতুন কথা নয়। পৃথিবীর সকল দেশেই কথাটি একটি জলজ্যান্ত সত্য। এই পুরনো সত্যটিকে বাংলাদেশের মতো দেশের রাজনীতিক কর্তারা জেনেবুঝেই মুখে উচ্চারণ করেন না, সাধারণ মানুষের থেকে সত্যটি আড়াল করে রাখেন। কিন্তু পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সে-ক্ষেত্রে সত্যিকার অর্থেই ব্যতিক্রম। এই জন্য তাঁকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। কিন্তু কথা হলো, এই সত্যোচ্চারণের পর বঞ্চিত দরিদ্রজনের জন্য সত্যোচ্চারক ও তাঁর সরকারের পক্ষ থেকে দরিদ্রজনের বঞ্চনা প্রতিরোধে একটি মূর্তনির্দিষ্ট রাজনীতিক-আর্থনীতিক কর্তব্য অনিবার্য হয়ে উঠে। এই কর্তব্য অর্থাৎ দরিদ্র নাগরিকেদের বঞ্চনামুক্তির ইশতেহারটি কী হবে এবং সে-রূপকল্পটি কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, সেটার কার্যক্রম শুরু করা।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে গৃহহীনদের ঘর দেওয়ার প্রকল্পে দেদার অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। যাদের ঘর পাওয়ার কথা তাঁরা ঘর পান নি এবং পেলেও সে ঘরে ‘গৃহপ্রবেশ’-এর আগেই সেটি ক্ষেত্রবিশেষে দেয়াল, ছাদ ইত্যাদিতে ফাটল ধরে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। গণমাধ্যমে এসব নিয়ে প্রতিবেদনও হয়েছে। সরকারের নেওয়া জনকল্যাণমূলক প্রতিটি প্রকল্পে এমন দুর্নীতিকেÑ যে দুর্নীতি ইতোমধ্যে আর্থসামাজিক ব্যবস্থার পরিসরে পুঁজির প্রভুত্বের উপর নির্ভর করে বহুমাত্রিকতা লাভ করে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে এবং অপ্রিয় হলেও বলতেই হয় যে, সমাজ পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুষ্টরা এই বহুমাত্রিক দুর্নীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টÑ প্রতিরোধ করা যাচ্ছে না। সরকার বলছেন এবং সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন দারিদ্রবিমোচনে, কিন্তু মাঝপথে জনগণের মধ্যে ধনবৈষম্য উত্তরোত্তর বাড়ছে বই কমছে না এবং বিপরীতে ‘দরিদ্ররা বঞ্চিত’ হওয়ার পথ আরও প্রশস্ত হচ্ছে।
দেশের ‘দরিদ্ররা বঞ্চিত’ এই বিষয়টি মন্ত্রী নিজের উপলব্ধিতে নিতে পেরেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আসল কথা হচ্ছে দরিদ্ররা বঞ্চিত। তারা কীভাবে বঞ্চিত হয় আমি দেখেছি। পদ্ধতিগত কারণে তারা বঞ্চিত। সরকারি বরাদ্দ সব সময় তাদের কাছে পৌঁছায় না।’ কিন্তু প্রকৃতপ্রস্তাবে বরাদ্দ কেবল নয়, বরাদ্দের মতোই সরকারের সকল প্রকার জনকল্যাণকর্মের নির্যাস দরিদ্রজনের কাছে পৌঁছায় না। যে-টাকায় বিদেশে বেগমবাড়ি হয়, সে-টাকা তো দেশের দরিদ্র মানুষকে ঠকিয়ে নেওয়া টাকাই। এককথায় রাষ্ট্রীয় বাজেট দরিদ্রবান্ধব হয়ে উঠে না। এবংবিধ সার্বিক বিবেচনায় মন্ত্রীর এই সত্য উপলব্ধির বিপরীতে জনগণের উপলব্ধিতে এটাও একটি সত্য হয়ে উঠে যে, তিনি অথবা তাঁর সরকার দরিদ্রজনের বঞ্চনা নিরসনের একটি ব্যবস্থা কিংবা পদ্ধতি গ্রহণ করবেন এবং তৎপ্রেক্ষিতে এই দেশে আর ‘দরিদ্ররা বঞ্চিত’ হবে না। আমরা সেই ‘পদ্ধতি’ বদলের অপেক্ষায় রইলাম এবং এই সুবাদে বলে রাখি যে, বর্তমান পুঁজিতান্ত্রিক কিংবা ধনবাদী পদ্ধতি বজায় রেখে দরিদ্রজনকে বঞ্চনার শিকার হতে রক্ষা করা যাবে না।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com