1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৮:৪৪ অপরাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

বাদামের বাম্পার ফলন : চাষিদের মুখে হাসি

  • আপডেট সময় বুধবার, ১০ মে, ২০২৩

জাহাঙ্গীর আলম ভূইয়া ::
বোরো ধানের পর এবার হাওরজেলা সুনামগঞ্জে বাদামের বাম্পার ফল হয়েছে। এতে চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি বছর জেলায় ১২ হাজার চাষি ১৭২৬ হেক্টর জমিতে বাদাম চাষ করেছেন। আর জেলায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩২০০ মেট্রিক টন। এর মূল্য ৩২ কোটি টাকা। এখন চলছে জমি থেকে বাদাম উত্তোলনের কাজ। এ বছর জেলার ৬টি উপজেলার ৫০টি গ্রামে ত্রিদানা, বারি, চীনাবাদাম, বিনা-৪, বিনা-৮ ও ঢাকা জাতের বাদাম চাষ হয়েছে।
চাষিরা জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমের ফলন গত মৌসুমের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। তারা আরও জানান, বেলে দোআঁশ মাটি ও উঁচু এলাকায় বাদাম চাষ ভালো হয়। জমিতে সামান্য বৃষ্টির কারণে যদি পানি জমে যায় তাহলে গাছ পচে যাবে। বালু মাটিতে অন্য কোন ফসল উৎপাদন করে বাদামের সমপরিমাণ লাভ হয় না। অন্যান্য ফসল উৎপাদনের চেয়ে বাদাম উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় বালুতে সবাই বাদামের চাষ করেছি। বাদাম রোপণের পর অন্য ফসলে ন্যায় কোন পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। নেই রাসায়নিক সারের ব্যবহার। বীজ রোপণ আর পরিপক্ব বাদাম উঠানোর শ্রমিক খরচ ছাড়া তেমন কোন খরচ নেই বললেই চলে। একটি ফসলেই কৃষকদের সারা বছরের সংসার চলে।
সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন হাওরে গিয়ে দেখা যায়, ঘরে বসে না থেকে গৃহিণীরা ও তাদের ছেলে মেয়েদের নিয়ে বাড়ির পাশেই বাদাম ক্ষেতে বাদাম তুলছেন। মাঠজুড়ে সবুজ পাতার সমারোহে প্রখর রোদের মধ্যেই উৎসব মুখর পরিবেশে শিশু, নারী ও পুরুষ সবাই বাদাম তুলছেন। কেউ বাদামের গাছ তুলছেন কেউ আবার গাছ থেকে বাদাম ছাড়িয়ে রাখছেন। অনেকেই আবার শখের বসে, বাড়তি আয়ের জন্য, অনেকে আবার নিজেরা খাবারের জন্য বাদাম তুলতে এসেছেন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত প্রখর রোদের মধ্যেই ছাতা টানিয়ে, কেউ ছোট ত্রিপাল টানিয়ে বাদাম গাছ তুলছেন।
বাদাম তুলতে আসা মনোয়ারা বেগম জানান, ঘরে বসে না থেকে সবার সাথে মিলে যে পরিমাণ বাদাম তুলেন, তা জমিয়ে ১০ভাগ করে ৯ ভাগ কৃষকের আর এক ভাগ যারা তুলবে তাদের দেয়া হয়। এতে করে যারা বাদাম তুলছেন সারাদিন ৪-৫শত টাকার বাদাম পেয়ে যান। আবার কোন কোন দিন আরও বেশি। এতে করে ভালই লাভবান হচ্ছেন সবাই।
বাদাম চাষি শাকিল মিয়া জানান, একটু নিচু জমিতে বোরো ধান চাষ এবং অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে চাষ করা হয় বাদাম। জানুয়ারি (পৌষ মাসে) বাদাম রোপণ করা হয় আর এপ্রিল থেকে মে মাসে বাদাম তোলা হয়। গত মৌসুমে চেয়ে এবার বাদামের বা¤পার ফলন হয়েছে। কম পরিশ্রমে বেশি লাভবান হওয়া যায় বিধায় গত বছরের তুলনায় এবার অনেক কৃষক আগ্রহী হয়ে বোরো ধানের পরিবর্তিতে বাদাম চাষ করেছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র দাস জানান, জেলায় গত বছর ১২২৫ হেক্টর বিভিন্ন জাতের বাদামের চাষ করা হয়েছে। চলতি বছর ১৭০৮ হেক্টর লক্ষ্যমাত্র ছিল, চাষ হয়েছে ১৭২৬ হেক্টর। এতে ৩ হাজার ২শত মেট্রিকটন বাদাম উৎপাদন হবে। এর মূল্য ৩২ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত ৫শত হেক্টর বাদাম তোলা হয়েছে আরও ১৫দিন লাগবে বাদাম তোলা শেষ হতে। সবচেয়ে বেশি চাষ করা হয়েছে তাহিরপুর উপজেলায়।
তিনি আরও জানান, সুনামগঞ্জে দুইটি মৌসুমে বাদাম চাষ হয়। অক্টোবরের শেষের দিকে বীজ বপন করা হয়। সে বীজ থেকে তিন মাস পরে বাদাম তোলা হয়। আবার জানুয়ারি মাসে বীজ বপন করে এপ্রিল-মে মাসে বাদাম তোলা হয়। জেলার তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, বিশ্বম্ভরপুর, সুনামগঞ্জ সদরসহ ৬টি উপজেলার ৫০টি গ্রামে বাদামের চাষ হয়েছে। প্রতি কিয়ারে (৩০ শতাংশে এক কিয়ার) বাদাম চাষে খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা আর বিক্রি হচ্ছে ১৪-১৫ হাজার টাকা। এবার তিন হাজার ৮৪০ মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। সার ও কীটনাশক বিনামূল্যে দেয়ায় এমন সাফল্য পেয়েছে কৃষক দাবি কৃষি অফিসের।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com