স্টাফ রিপোর্টার ::
দাবদাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে সুনামগঞ্জের জনজীবন। গরমের তীব্রতায় ছোট-বড় সবার হাঁসফাঁস অবস্থা। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না অনেকে। মানুষ গরমে কষ্ট পাচ্ছেন। অপরদিকে বিদ্যুতের লোডশেডিং এই কষ্টকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। এদিকে, সিলেট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আগামী দু’দিন পর তাপমাত্রা কমতে পারে।
মঙ্গলবার দিনভর শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, তীব্র গরমে নাজেহাল অবস্থা প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষের। বিশেষ করে শ্রমজীবী ও কর্মজীবীদের জীবন যেন বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম। তারপরও জীবন-জীবিকার তাগিদে ঘাম ঝরিয়ে ছুটতে হচ্ছে তাদের।
আলফাত স্কয়ার এলাকায় কথা হয় রিকশাচালক শহীদুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, গরম কেমন পড়ছে, তা তো দেখতেই পাচ্ছেন। এটা তো ধনী-গরিবের জন্য আলাদা হয় না। তারপরও যাদের গাড়ি আছে, তারা এসির মধ্যে শান্তিতে থাকতে পারে, বাড়ি ও অফিসে ঠা-া বাতাসের মধ্যে বসে থাকতে পারে। আর আমাদের মতো গরিবের এই গরমের মধ্যেই কষ্ট করে ভাত জোগাতে হয়।
তিনি আরও বলেন, গরমে শুধু যে কষ্ট হচ্ছে তা নয়, আয়-রোজগারও কমেছে। একদিকে গরমের কারণে বেশিক্ষণ রিকশা যেমন চালানো যায় না, আরেকদিকে যাত্রীও তেমন পাওয়া যায় না। মানুষ গরমের কারণে দিনে বাসা থেকে তেমন বের হয় না।
সিএনজি চালক হোসেন আলী বলেন, এই রোদে গাড়ি চালাতে কষ্ট হয়। কিন্তু জীবিকার তাগিদে প্রতিদিনই বের হতে হয়। এতেও তেমন লাভ হচ্ছে না। রোদ আর গরমের কারণে যাত্রীও পাওয়া যায় না।
ষোলঘর এলাকার বাসিন্দা মতিন মিয়া বলেন, এই তীব্র গরমের সবারই কষ্ট হচ্ছে। এই কষ্ট আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে বিদ্যুতের লোডশেডিং।
এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, বিদ্যুতের চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ায় দপ্তরের আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিং
করতে হচ্ছে। গ্রাহকগণের এই সাময়িক অসুবিধার জন্য বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড, সুনামগঞ্জ আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
এদিকে, সিলেট আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (৯ মে) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময়ে দিন ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। সিলেট আবহাওয়া অফিস জানায়, বৈশাখ মাসে খরাপূর্ণ আবহাওয়া থাকাটাই স্বাভাবিক। গত দুই দিন বৃষ্টিপাত কম হওয়ার পাশাপাশি তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ গরম অনুভূত হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদ মো. হাফিজুর রহমান জানান, এরই মধ্যে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পার হয়েছে। তাপপ্রবাহ ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশে। অন্যদিকে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ আরও শক্তিশালী হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে বলে।