স্টাফ রিপোর্টার ::
বৃষ্টির পানিতে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় তলিয়ে গেছে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালমারা হাওরের বোরো ধান। পাশাপাশি অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গার ধানে দেখা দিয়েছে ব্লাস্ট রোগ। এতে উভয় সংকটে পড়ে শিয়ালমারার কৃষকরা এখন দিশেহারা। বাধ্য হয়েই কোমর পানিতে নেমে যতটুকু সম্ভব ধান কেটে ঘরে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, গত কয়েকদিন রাতে ও ভোরে টানা বৃষ্টি ও সুনামগঞ্জ পৌরসভার ড্রেনের পানিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয় শিয়ালমারা হাওরে। বৃষ্টি ও ড্রেনের পানি হাওর থেকে বের হওয়ার জন্য শান্তিগঞ্জের উথারিয়া-পাথারিয়া বাঁধে দুটি রিং বসানো ছিল। সেই রিং দিয়ে পানি বের হওয়ার পথ বন্ধ করে দেয়া হয়। পানি বের হওয়ার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ায় শিয়ালমারা হাওরে জলাবদ্ধতা কঠিন রূপ নেয়। পরে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো মিলে বাঁধটির রিং খুলে দিয়ে পানি বের হওয়ার রাস্তা করে দেয়। এরপরও রক্ষা হয়নি। জলাবদ্ধতায় এই হাওরের প্রায় ৫০ হেক্টর বোরো জমির ধান তলিয়ে গেছে। রবিবার সকাল থেকে বিকেলের মধ্যেই হাওরের সকল ধান পানির নিচে তলিয়ে যায় বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা।
শিয়ালমারা হাওরের কৃষক ভানু বিশ্বাস বলেন, ৬ কেয়ার জমি করেছিলাম। সব জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এই ধানের ওপর আমাদের জীবন। তাই যতটুকু পারছি পানিতে নেমে ধান কাটার চেষ্টা করছি।
ডোপিকোণা গ্রামের কৃষক গোপাল বিশ্বাস বলেন, যাদের জমি শুকনো আছে তারা মরছে ব্লাস্ট রোগে। আমরা সবদিকে মরছি। ১২ কেয়ার জমির সবই জলে গেছে। বছর কী খেয়ে যাবে জানি না। ওপরওয়ালাই ভরসা এখন।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রাকিবুল আলম বলেন, যে সমস্যার কারণে পানি বের হচ্ছিল না সেটা সমাধান করা হয়েছে। বাঁধে রিংয়ের মুখ খুলে দেওয়া হয়েছে। হাওর থেকে পানি নেমেও গেছে। এখন যেটুক অংশ ডুবে আছে তা খালের পাশের জমি। এগুলো এমন সময় ডুবেই থাকে, অস্বাভাবিক কিছু না।