1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
  3. [email protected] : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৫:২৯ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

শান্তিগঞ্জে নদী ভাঙনে নিঃস্ব অনেক পরিবার

  • আপডেট সময় শনিবার, ১ এপ্রিল, ২০২৩

শহীদনূর আহমেদ ::
সুজফর আলীর বয়স ৯৫-এর কোঠায় পা দিয়েছে। বয়সের ভারে ন্যুব্জ মানুষটি প্রতিদিন ভাঙন কবলিত নাইন্দা নদীর তীরে বসে অনিশ্চয়তার দিন গুণেন। বয়োবৃদ্ধ স্বামীর সাথে সর্বনাশা নদীর ভাঙন দেখে তেরাবান বিবি। ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েগেছে সুজফর আলীর বসতঘর। ভাঙতে ভাঙতে বসতভিটের সকল জমি এখন নদীর মাঝখানে। তিন ছেলে আর নাতি-নাতনি নিয়ে অন্যের জায়গায় অস্থায়ী সামিয়ানা তৈরি করে কোনোমতে বসবাস করছেন এই বয়োজ্যেষ্ঠ দম্পতি।
সুজফর আলীর মতো ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন শান্তিগঞ্জ উপজেলার সদরপুর গ্রামের প্রায় অর্ধশত পরিবার। নাইন্দা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে সর্বস্ব হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছেন তারা। পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর দিন কাটছে ক্ষতিগ্রস্তদের। অব্যাহত ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে আরও ঘরবাড়ি, সড়ক, শ্মশান, মন্দিরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এই নদীর ভাঙন দিন দিন ভয়াবহ রূপ ধারণ করলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
২০০৪ সালের বন্যার পর থেকে সদরপুর এলাকায় নাইন্দা নদীর ভাঙন শুরু হয়। দীর্ঘ ১৯ বছরের অব্যাহত ভাঙনে সদরপুর গ্রাম বিলীনের পথে। ভিটেমাটি হারিয়ে অনেক পরিবার অন্যত্র অবস্থান করছেন। ২০২০ সাল ও ২০২২ সালের বন্যার পর থেকে নাইন্দা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কও। ধসে গেছে সড়কের সদরপুর সেতুর অ্যাপ্রোচ। সেতুটিও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এটি যেকোনো সময় নদীতে বিলীন হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এদিকে নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মাথাগোঁজার ঠাঁই পেতে সরকার সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
সুজফর আলী বলেন, বয়স এখন শেষ বেলায়। ছেলেসন্তান নিয়ে টিনের একটি ঘরে বসবাস করে আসছিলাম। নদী সব নিয়ে গেছে। এক ছেলে কামাই রোজগার করে। তার টাকায় খেয়ে না খেয়ে কোনো মতে দিন পার করছি। এখন ঘরবাড়ি হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি। এই বয়সে কোথায় গিয়ে থাকবো। কে আমাদের জায়গা দিবে।
আলমাস উদ্দিন বলেন, গ্রামের অনেক পরিবার অন্যত্র চলে গেছে। প্রতিদিনই কারো না কারো জায়গা-জমি নদী নিয়ে যাচ্ছে। ভাঙন রোধে মন্ত্রীর কাছে গিয়েছি। সরকারি অনেক কর্মকর্তার কাছে গিয়েছি। কেউ আমাদের কথা ভাবছে না। আমরা কোথায় যাবো? কে আমাদের আশ্রয় দিবে?
জামাল উদ্দিন নামের আরেক বাসিন্দা অনেকটা রাগান্বিত হয়ে বললেন, এসব লেখালেখি করে কি হবে? আমরা কি মানুষ, আমাদের কি বাঁচার অধিকার আছে? এতো বছর ধরে ভাঙনের কবলে আমরা কেউ আমাদের খোঁজ নিচ্ছে না।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ বলেন, সদরপুরের নদী ভাঙন প্রতিরোধে আমাদের নজর আছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডে লিখিত আবেদন করেছি। আশা করছি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিবেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপজেলা উপ-প্রকৌশলী মাহবুব আলম বলেন, সদরপুরের ভাঙনের তীব্রতা অনেক। ভাঙনের যে ধরন এখানে ছোটখাটো প্রকল্প দিয়ে কিছু হবে না। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট চিঠি লিখেছি। দেখা যাক বড় কোনো প্রকল্প আসে কি-না।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com