গত বৃহস্পতিবারের (৩০ মার্চ ২০২৩) দৈনিক সুনামকণ্ঠের একটি শিরোনাম ছিল, ‘গোপন তথ্য ওপেন করতেন ছাতকের রুমেন’। আসলে বিষয়টা কী? এমন প্রশ্নোদয় হতেই পারে যে-কারও মনে এবং তা-ই স্বাভাবিক। পত্রিকায় লেখা হয়েছে, ‘দেশের নাগরিকদের মুঠোফোনের কলডাটা (সি.ডি.আর.) আর জাতীয় পরিচয়পত্রের (এন.আই.ডি.) তথ্য নিরাপত্তার প্রশ্নে গোপন জিনিস। শুধু আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চাইলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে এসব তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। তবে সাধারণ কেউ আইনি প্রয়োজনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতার মাধ্যমেই এসব বিষয় জানতে পারেন। নতুবা এসব বিষয় নিয়ে ঘাটাঘাটি করা আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আর সেই ভয়ংকর অপরাধ সিলেটে বসে করে যাচ্ছিলেন ছাতকের তরুণ মো. রুমেন হোসেন (২৩)।’ তবে তিনি র্যাবের হাতে আটক হয়েছেন। তাঁর উপযুক্ত শাস্তি হওয়া দরকার।
এই ঘটনা মামুলি কোনও ঘটনা নয়, এটি একটি অসীম তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা, যা সমাজে একটি ভয়ঙ্কর বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে এবং সে-বার্তাটি আর কীছুই নয়, সেটি হলো এই দেশের নাগরিকদের ‘নাগরিক গোপনীয়তা’ বলে ঝুঁকির মুখে। এখানে এক শ্রেণির মানুষ অন্য শ্রেণির মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে। এক্ষেত্রে জননিয়ন্ত্রণ কার্যকর করার উদ্দেশ্যে সর্বব্যাপী নজরদারির কার্যক্রম এর বেশিকীছু করতে পারছে বলে মনে হয় না। তথ্য সংরক্ষণের সামগ্রিক প্রক্রিয়ার কার্যকর প্রতিস্থাপনা বলে দিচ্ছে, নিরপরাধ মানুষের তথ্যকে ইতোমধ্যেই দামি পণ্য করে তোলে তথ্য বাণিজ্যের পথ সুগম করা হয়েছে। তথ্যের অর্থবহ ব্যবহার করে দেশের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র, মানুষের প্রতি মানুষের অন্যায় নির্যাতন, অর্থচুরি ও পাচার, ঘুষ-দুর্নীতি ঠেকানো যাচ্ছে না। দিনে দিনে এসব বেড়েই চলেছে।
বিদগ্ধমহল মনে করেন, প্রশাসনকে রাষ্ট্র ও সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন তথ্য সর্বসমক্ষে প্রকাশ করার বিষয়ে এবং রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় নাএমন ‘ব্যক্তিগত গোপনীয়তা’ রক্ষার বিষয়ে আরও যতœপর হতে হবে।