স্টাফ রিপোর্টার ::
গনিয়াকুড়ি হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধ কেটে দিয়েছে মাছ শিকারিরা। তবে গ্রামবাসী কেটে দেয়া বাঁধ দ্রুত মেরামত করায় প্রাথমিকভাবে রক্ষা পেয়েছে চারটি গ্রামের চারশত একর জমির ধান। তবে এখনও এই বাঁধ দিয়ে হাওরে পানি প্রবেশ করায় ফসল হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়াও এই বাঁধ ভাঙ্গলে সন্ন্যাসী, এরালাকোনা দুটি হাওরের ফসলি জমি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ নিয়ে অসাধু মাছ শিকারি ও কৃষকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ঘটনাটি গত মঙ্গলবার (২২ মার্চ) তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের মান্দিয়াতা গ্রামের পাশে গনিয়াকুড়ি হাওরে ঘটেছে। এ বিষয়ে মাছ শিকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ও বাঁধ মেরামত করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত আবেদন করেছেন উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের কৃষক মো. জায়েদ মিয়া।
লিখিত আবেদন থেকে জানাযায়, মাছ ধরার জন্য গত মঙ্গলবার (২২শে মার্চ) সকালে উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের গনিয়াকুড়ি হাওরের পাশে মান্দিয়াতা গ্রামের আব্দুল ছত্তার, আব্দুল কাদির, আলী আমজদ, আব্দুল জব্বার, সজিব মিয়া, রাজীব মিয়া, বুরহান, দিলোয়ার, আলম, আলী জান, তুযেল মিয়া দলবদ্ধ হয়ে মাছ ধরার জন্য গনিয়াকুড়ি হাওরের বাঁধ কেটে ফেলে। এতে করে হাওরে পানি প্রবেশ করতে দেখে হাওরপাড়ের সাধারণ কৃষকরা তাদের কাছে গেলে গালি-গালাজসহ মারধর করতে থাকে। এই বাঁধ মেরামত ও বাঁধ কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য ইউএনও’র হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
বাঁধ কাটার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আলী আমজাদ জানান, বাঁধ কাটার সাথে আমি জড়িত না। আমি কিছুই জানিনা। গনিয়াকুড়ি বিল সাত্তারসহ সাত আটজন ইজারা নিয়েছে। বাঁধ কাটা হলেও আবার মেরামত করা হয়েছে।
ইজারাদার আব্দুছ ছাত্তার জানান, গনিয়াকুড়ি বিলে ইজারা নিয়েছি। কিন্তু বাঁধটি আমরা কাটিনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে বাঁধ ভেঙে গেছে। আমি নিজের টাকা খরচ করেই বাঁধ মেরামত করেছি।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সাজিনুর মিয়া জানান, গনিয়াকুড়ি হাওরে কষ্টে ফলানো চারশত কৃষকের ফসল রক্ষায় কৃষকরা নিজেদের অর্থায়নে বাঁধ দেয়। সেই বাঁধ মাছ ধরার জন্য কাটায় এক মাত্র বোরো ধান হুমকির মুখে পড়েছে। যারা বাঁধ কেটেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। বাঁধটি মেরামত করাও দরকার। না হলে পাহাড়ি ঢলে এই বাঁধ টিকবে না।
এ ব্যাপারে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুপ্রভাত চাকমা বলেন, হাওরে বাঁধ কেটে মাছ ধরার বিষয়ে লিখত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে।