স্থানীয় একটি দৈনিকে গত বুধবারে (২২ মার্চ ২০২৩) ‘সদরপুর সেতুর অ্যাপ্রোচে ধস \ সুনামগঞ্জ-সিলেটের সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্নের শঙ্কা’ এই শিরোনামে একটি সংবাদ ছাপা হয়েছে। দেশের বিভিন্নস্থানে এইরূপ সমস্যা দেশের সড়ক পথে সেতু তৈরির সূচনালগ্ন থেকে এখনও পর্যন্ত প্রতিকারহীনভাবে প্রতিনিয়ত ঘটেই চলেছে, কারও কোনও ভ্রুক্ষেপ নেই, এমনকি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষেরও। এ নিয়ে বিস্তারিত বিতং বিতরণের কোনও আবশ্যকতা আছে বলে মনে হয় না। কিন্তু বলা দরকার যে, সড়কপথে সেতু নির্মাণের প্রযুক্তি-প্রকরণ বদলানোর সময় এসেছে।
ক’দিন পরে ধসে যাবে কিংবা ভেঙে যাবে, এমন আশঙ্কাকে জিইয়ে রেখে কেন সেতুর অ্যাপ্রোচ নির্মাণ করা হবে, সেটা কীছুতেই বোধগম্য নয়। মনে হয়, প্রাযুক্তিক নিয়মে নির্ধারিত সেতুর স্বীকৃত স্থায়ীত্বকালের সমান করে অ্যাপ্রোচ নির্মাণের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ইতোমধ্যে আবিষ্কৃত হয়ে গেছে এবং সেটা বাংলাদেশ বাদে বিশ্বের অন্যান্য দেশে অনুসরণ করা হচ্ছে। কারণ সেসব দেশে তো ব্যতিক্রম বাদে অ্যাপ্রোচ নিয়ে এমন ধস-ভাঙনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না। এই বিবেচনায় সচেতনজনের মনে প্রশ্নোদয় হতেই পারে যে, সহজে ধসে ও ভেঙে যায় সেতুর সঙ্গে এমন ধরনের অ্যাপ্রোচ আমাদের দেশে কেন নির্মাণ করা হবে? এবং তারপর যে-কেউ প্রশ্ন করতেই পারেন, এইভাবে আর কতো পশ্চাৎপদ প্রাযুক্তিক নীতি অনুসরণ করে দেশের সম্পদের অপচয় করা?
বিদগ্ধমহলের অভিমত এই যে, সেতুর অ্যাপ্রোচ নির্মাণের পুরনো প্রাযুক্তিক নীতি এখন বদলাতে হবে। প্রতিটি অ্যাপ্রোচকে টেকসই করার অভিপ্রায়ে সে-গুলো নির্মাণের ক্ষেত্রে বর্তমান গঠন কাঠামো পরিহার করে যুক্তিসঙ্গত ও স্থানিক প্রতিবেশের সঙ্গে খাপখায় এমন বিজ্ঞানসম্মত গঠন কাঠামো বাস্তবায়িত করতে হবে। প্রয়োজনে মূল সেতুর চেয়ে অ্যাপ্রোচ নির্মাণের ব্যয় যদি বেশি হয়ে যায় তাতেও কোনও বাঁধা নেই। এমনটাই হওয়া উচিত। তা না হলে বর্তমান নিয়মে অ্যাপ্রোচ নির্মাণ অব্যাহত থাকলে সেগুলো অনাকাক্সিক্ষত সময়ে ধসে যাবে কিংবা ভাঙবে এবং যথারীতি মেরামত, গড়া, নতুন করে নির্মাণ তৎপর আবার সেই একই কাজ করার পরিণতি স্বরূপ ব্যয়ের আকারে অনিবার্য অপচয়ের বোঝা কেবল বাড়তেই থাকবে অনাদিকালব্যাপী। জাতিগত এই নির্বোদ্ধিতার অবসান চাই।