স্টাফ রিপোর্টার ::
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উদযাপন উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জাকির হোসেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. আলী আমজদ, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর রজত কান্তি সোম মানস, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ স¤পাদক অ্যাড. সামছুল আবেদীন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ স¤পাদক অ্যাড. সৈয়দ নজরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বক্তব্য রাখেন হাজী মকবুল পুরকায়স্থ (এইচএমপি) উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী সামিউল হোসেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. আলী আমজদ বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে পিতা-মাতা খোকা বলে ডাকতেন। পরিবারের পরম যতেœ বেড়ে উঠেন শেখ মুজিবুর রহমান। বেড়ে উঠার সাথে সাথে সমাজসেবায় যুক্ত হয়ে পড়েন তিনি। শিশু বয়সে তিনি দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ান। বঙ্গবন্ধুর নানা কর্মকা-ে শৃঙ্খলা থাকায় প্রবীণ রাজনীতিবিদদের নজর কাড়েন। ৬৬ ছয় দফা আন্দোলন বঙ্গবন্ধুর প্রেরণা ছিল। রাজপথে, কারাগারে, ফাঁসির মঞ্চেও বঙ্গবন্ধুর ভাবনায় ছিল এদেশের জনগণ। আগামী প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়ে তুলতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর রজত কান্তি সোম মানস বলেন, ’৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হারিয়েছি। বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে রাজনীতি হবে না। যদিও কেউ কেউ বঙ্গবন্ধুকে বাদ দিয়ে রাজনীতির কথা ভাবেন। বঙ্গবন্ধুর অন্তরে ধারণ করেছিলেন সত্য, সুন্দর ও মানবিকতাকে। তিনি বলেন, আজকের শিশুরা নীতি নৈতিকতা শিখতে চায়। পুঁথিগত শিক্ষা ছাড়াও নীতি নৈতিকতার
শিক্ষার প্রয়োজন আছে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি ভাষণ ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে শেখান। সমাজ আজ পাল্টে যাচ্ছে। আপনি, আমি ও সন্তানদের অবশ্যই বঙ্গবন্ধুর জীবন কর্ম জানা ও জানানো উচিত।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর স্বপ্ন দেখেছিলেন। এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখছেন। এই স্বপ্ন সকল জনগণের উন্নত জীবন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন। তবে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে হতে হবে স্মার্ট নাগরিক। এভাবেই শিশুদের গড়ে তোলতে হবে। স্মার্ট নাগরিক হতে হবে। স্মার্ট চিন্তা-ধারণা থাকতে হবে। তথ্যপ্রযুক্তি পরিচালনায় স্মার্ট নাগরিকের প্রয়োজন রয়েছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ বলেন, যিনি স্কুল জীবন থেকে বিনয়ী, ভদ্র, নম্র, তিনি হলেন আমাদের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক মুক্তি দিতে চেষ্টা করে গেছেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু শিশুদের প্রচ- ভালবাসতেন। শিশুদের নিয়ে খেলাধূলা করতেন। বর্তমানে তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশু শিক্ষার অগ্রগতি নিয়ে কাজ করছেন। ২০৪১ সালে আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছেন তিনি।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, আমাদের প্রজন্মকে মানবিক গুণাবলী অর্জন করতে হবে, সৎ সাহস যোগাতে হবে বঙ্গবন্ধুর মতো। মানুষের কষ্ট লাঘবে চেষ্টা করে গেছেন বঙ্গবন্ধু। তিনি বলেন, শিশুরা ভাল শিক্ষায় শিক্ষিত হলে ভবিষ্যতে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে সহজ ও সঠিক হবে। শিশুরা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হলে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা সহজেই সম্ভব হবে।
আলোচনা সভা শেষে ১০৩ জন শিশুশিল্পীর দলীয় কণ্ঠে ৩টি সংগীত পরিবেশন করা হয়। পরে অন্যান্য শিশু শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন।
সাংস্কৃতি অনুষ্ঠান শেষে পুরস্কার বিতরণ করেন অতিথিবৃন্দ। আলোচনা সভার আগে বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।