স্টাফ রিপোর্টার ::
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতা আজাদ মিয়ার চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকীকে সামনে রেখে আজ তাঁকে স্মরণ করবে হাওর বাঁচাও আন্দোলন। শুক্রবার বিকেলে দৈনিক সুনামকণ্ঠ কার্যালয়ে মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও খুনীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে কর্মসূচি পালন করবেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ জানান, হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন কৃষক নেতা আজাদ মিয়া। দুর্নীতি দমন কমিশনে দেখার হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজে অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নূরুল হকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন তিনি। এ কারণে দুর্নীতিবাজ চক্র তাকে হুমকি ধমকি দিয়ে আসছিল।
এ ঘটনার জেরেই ২০১৯ সালের ১৪ মার্চ রাতে সুনামগঞ্জ পিটিআইয়ের সামনে তাঁকে লোহার পাইপ দিয়ে মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে ভাড়াটে খুনীরা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৭ মার্চ মারা যান তিনি।
১৮ মার্চ আজাদ মিয়ার বড়ভাই আজিজ মিয়া বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ সদর থানায় ইউপি চেয়ারম্যান নূরুলহকসহ চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার সব আসামিকেই জেল হাজতে পাঠানো হয়। মামলার অপর আসামিরা হলেন- জলালপুর গ্রামের উকিল আলী, তার ছেলে পাভেল আহমদ ও মিলের ড্রাইভার রিপন মিয়া।
এ ঘটনা অনুসন্ধানে নেমে পুলিশ সুনামগঞ্জ শহরের আরপিন নগরের বাসিন্দা শ্রাবণকে আটক করে। শ্রাবণ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে উকিল আলীর ছেলে পাভেল ও রিপন মিয়া কৃষক নেতা আজাদ মিয়াকে খুন করার জন্য টাকা দিয়েছিল বলে স্বীকার করে। পরে হত্যাকা-ে ব্যবহৃত লোহার পাইপটিও উদ্ধার করে পুলিশ।
এদিকে মামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে আলোচিত নূরুল হক ও উকিল আলীকে বাদ দিয়ে পুলিশ আদালতে চার্জশিট প্রদান করায় বাদীপক্ষ নারাজি আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ২০২১ সালের ৮ নভেম্বর মামলাটি পিবিআইকে অধিকতর তদন্ত করার জন্য প্রেরণ করেন। বর্তমানে মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছে।
হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, হাওরের অসহায় কৃষকের পক্ষে, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলায় শহীদ হয়েছিলেন কৃষক নেতা আজাদ মিয়া। খুনীদের বিচার চাইতে গিয়ে এখন দুর্নীতিবাজ চক্র তার পরিবারের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানি করছে। নানাভাবে হুমকি ধমকিসহ তাদেরকে পারিবারিকভাবে হেয় করার চেষ্টা করছে।