1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ১১:০৩ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

“হাওরের পিআইসি গঠন নিয়ে দুর্নীতি ওপেন সিক্রেট”

  • আপডেট সময় সোমবার, ৬ মার্চ, ২০২৩

বিশেষ প্রতিনিধি ::
দৈনিক কালের কণ্ঠের সুনামগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি শামস শামীমের পাঠানো প্রতিবেদন গত ২ মার্চ পত্রিকার শেষ পাতার ‘নির্ধারিত সময়ে ১০৭৮ বাঁধের কোনোটির কাজ শেষ হয়নি’ শিরোনামের প্রধান প্রতিবেদন তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন পানিসম্পদ সচিব নাজমুল আহসান। ৩ মার্চ শনিবার রাতে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্টদের এই নির্দেশনা দেন। একই সঙ্গে আগামী ৭ মার্চের মধ্যে বাঁধের কাজ শেষ করার নির্দেশনাও দেন তিনি। মতবিনিময় সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বাঁধ সংক্রান্ত জেলা কমিটির সদস্যরাও প্রকল্প গ্রহণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসাররা জড়িত বলে অভিযোগ করেন। টাকার বিনিময়ে পিআইসি দিয়ে একটি সিন্ডিকেটের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তারা পিআইসি অনুমোদনসহ অক্ষত, অপ্রয়োজনীয় ও অল্প ক্ষতিগ্রস্ত প্রকল্পে বিপুল বরাদ্দ দিয়ে দুর্নীতি করছেন বলে অভিযোগ করা হয়। এগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে সচিবকে অনুরোধ জানান বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জেলা কাবিটা মনিটরিং ও বাস্তবায়ন কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান।
মতবিনিময়সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকার নাম ধরে বলেন, কালের কণ্ঠ পত্রিকায় সুনামগঞ্জের শাল্লাসহ বিভিন্ন এলাকার প্রকল্পের নাম উল্লেখ করে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। প্রতিটি প্রকল্পে প্রিওয়ার্ক ও পোস্ট ওয়ার্ক মিলিয়ে প্রয়োজনে ড্রোন বা প্রযুক্তি ব্যবহার করে আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে। প্রিওয়ার্ক ও পোস্ট ওয়ার্ক মিলিয়ে প্রকল্পের বিস্তারিত তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ থাকতে হবে। এছাড়াও মতবিনিময় সভায় অন্যান্য যেসব প্রকল্পের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে সেই তথ্যও প্রতিবেদনে নিয়ে আসার নির্দেশনা দেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম, পাউবো সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী খুশি মোহন সরকার, সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম, পুলিশ সুপার মো. এহসান শাহ, সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম, গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আলী আমজাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, সাংবাদিক পঙ্কজ দে, বিন্দু তালুকদার প্রমুখ।
মতবিনিময় সভায় নির্ধারিত সময়ে কাজ কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী আমজাদ। তিনি ধর্মপাশা উপজেলার বিভিন্ন প্রকল্প ঘুরে এসে মতবিনিময় সভায় লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সবাই জানে একটি চক্রের সঙ্গে মিশে টাকা নিয়ে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের পিআইসি দেওয়া হয়। অক্ষত, অপ্রয়োজনীয় ও অল্প ক্ষতিগ্রস্ত প্রকল্পে বিপুল বরাদ্দ দেওয়া হয়। হাওরের পিআইসি গঠন নিয়ে দুর্নীতি ওপেন সিক্রেট। ইউএনও ও এসও মিলে একটি সিন্ডিকেট করে দুর্নীতি করছে। এই দুর্নীতির তদন্ত হওয়া দরকার। তিনি বলেন, দুর্নীতির কারণে হাওরে সরকারের উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতিবাজরা আমাদের নেত্রীর বারোটা বাজিয়ে দিচ্ছে। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আগামী নির্বাচনে আমাদের এলাকায় ভীষণ ক্ষতি হয়ে যাবে।
মতবিনিময় সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান বলেন, এবার কাজ শুরু করতে বিলম্ব হয়েছে। তাই কাজ শেষ করতেও বিলম্ব হচ্ছে। আগামী ৭ মার্চও বাঁধের কাজ কোনভাবেই শেষ করা যাবেনা। বিভিন্ন এলাকায় অপ্রয়োজনীয়, অক্ষত ও অল্প ক্ষতিগ্রস্ত প্রকল্পেও সরকারের বিপুল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সাংবাদিক বিন্দু তালুকদার তার বক্তব্যে বলেন, এবারও অপ্রয়োজনীয়, অক্ষত বাঁধে বিপুল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ ও প্রকল্প বাড়ানো হলেও নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হয়নি। কাজ শেষ করতে মার্চ মাস লেগে যাবে। তিনি বলেন, অপ্রয়োজনীয় বাঁধের কারণে বাঁধে মাটি দিতে গিয়ে হাওরের কান্দা উজাড় করা হচ্ছে। এতে বৈশাখে ক্ষেত থেকে ধান নিয়ে আসা ও চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে। হাওরের প্রতিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
সাংবাদিক পঙ্কজ দে বলেন, এখনো ১৯টি ক্লোজারের কাজ শেষ হয়নি। সবে মাত্র বিভিন্ন এলাকায় বাঁধে মাটির কাজ শুরু হয়েছে। তাছাড়া দুর্যোগের সময় ইউএনও ও এসও ফোন ধরেননা এবং পিআইসিদের বাঁধে পাওয়া যায়না। এতে বাঁধ আরো ঝুঁকির মধ্যে থাকে।
এভাবে মতবিনিমিয় সভায় সুধীজন হাওরের বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত কাজ শেষ করার অনুরোধ জানান। পাশাপাশি দুর্নীতি ও অনিয়ম রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।

 

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com