স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের পৈন্দা গ্রামে পুরাতন সুরমা নদীর তীরে রাস্তায় অক্ষত ও অল্প ক্ষতিগ্রস্ত ফসলরক্ষা বাঁধে প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়ে সরকারি অর্থ অপচয়সহ পিআইসি দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার। পুরাতন বাঁধে মাত্র ১ ফুট মাটি ফেলে সরকারি অর্থ তছরুপের উদ্যোগ সম্পন্ন করে এখন বাঁধের স্লোবের পুরাতন ঘাসকে কেটে বাঁধ নতুন দেখানোর কৌশল নিয়েছেন তিনি। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
সরেজমিন বাঁধে গিয়ে দেখা যায়, বাঁধটির ৮০ ভাগই অক্ষত। পুরাতন বাঁধের উপরে মাত্র এক ফুট মাটি ফেলে নতুন দেখানোর কৌশল নেওয়া হয়েছে। তবে এখনো কাজই শেষ করতে পারেনি তারা। নতুন অল্প যে মাটি ফেলেছে সেখানেও দুর্বা ঘাস লাগায়নি। অভিযোগ উঠেছে প্রকল্প অনুমোদনের সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার মো. আশরাফুল সিদ্দিক ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের একটি চক্র সুবিধা নিয়ে অতিরিক্ত বরাদ্দ দিয়েছে। এদিকে ভৈষবেড় ফসলরক্ষা বাঁধে গিয়ে দেখা গেছে, বাঁধের কাজ শেষ হয়নি। ডিজাইন অনুযায়ী কাজও হচ্ছেনা এবং কমপেকশন করা হচ্ছেনা। অল্প ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধেও বিপুল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিন শনিবার বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, বাঁধের স্লোবের সামান্য অংশে বাঁশ দিয়ে বেড়া দেওয়া হচ্ছে। বাকি অংশের মাটি বাঁধের গোড়া থেকেই নেওয়া হয়েছে। এর পরের অংশ (ভৈষবেড়মুখি) পুরোটাই ভালো। ভালো রাস্তার উপরে মাত্র ৭-৮ ইঞ্চি মাটি ফেলে নতুন দেখানোর চেষ্টা চলছে। কিছু স্থানে দেখা গেল স্লোবের পুরাতন দুর্বাঘাসকে ছেটে নতুন দেখাতে চাচ্ছে পিআইসির লোকজন।
বাঁধের স্লোবে কর্মরত এক শ্রমিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাঁধ ফুরা বালা। একজেরা অংশ ভাঙ্গা। যত টেকা দিছে অত টেকা লাগেনা। সরকারি টেকার মাইবাপ নাই, তাই অত টেকা দিছে।
হাওরের কৃষি ও কৃষক রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সদস্যসচিব অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার বলেন, সদর উপজেলায় এবার পরিকল্পিতভাবে সরকারি অর্থ হরিলুট করতে বিপুল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অল্প ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধেও সমান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বরাদ্দ বাড়িয়েও কাজ শেষ করা যায়নি। প্রতিটি পিআইসি অনুমোদন দিয়ে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগও মাঠে গিয়ে আমরা পেয়েছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার মো. আশরাফুল সিদ্দিক বলেন, সার্ভেয়াররা মেপে যথাযথ বরাদ্দ দিয়েছেন। কোন অনিয়ম হয়নি। তাছাড়া কাজ শেষের পথে বলে জানান তিনি।