‘সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধোপাজান-চলতি নদী বালু-পাথর মহাল দীর্ঘ ৪ বছর বন্ধ রয়েছে। এতে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। অপরদিকে নদীতে বালু-পাথর জমে দিন দিন নাব্যতা হ্রাস পাচ্ছে। তাছাড়া মহাল বন্ধ থাকায় বালু-পাথর উত্তোলনে সম্পৃক্ত লাখো শ্রমিক এবং হাজারো ব্যবসায়ী মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তারা অবিলম্বে মহালটি খোলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।’ গত শুক্রবারের (২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩) দৈনিক সুনামকণ্ঠে এইরূপ একটি সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। আমরা পরিস্থিতির শিকার ভোক্তভোগী শ্রমিক-ব্যবসায়ীদের প্রতি সমবেদনা জানাই এবং তাঁদের যুক্তিসঙ্গত দাবিকে সমর্থন করছি। কিন্তু মহালটি খোলে দেওয়ার আগে কেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ও প্রকৃত প্রস্তাবে কী সমস্যা ছিল, তার সমাধান করে মহালটিকে খোলে দেওয়া যেতে পারে বলে অভিজ্ঞমহলের ধারণা।
তাছাড়া খোলে দিলে এলাকার প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিসরে কী কী নেতিবাচক প্রভাব পড়বে তা খতিয়ে দেখে সে-গুলো প্রতিহত করার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করেই খোলে দিলে হীতে বিপরীত অবস্থার উদ্ভব ঘটতে পারে, সে-কথাও ভুলে গেলে চলবে না। সাধারণত বালুমহালের পরিসরে দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়নের বিস্তারসহ প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিঘিœত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায় বা আছে, সে-সমস্যার সমাধানও না করে মহালটি খোলে দেওয়া কোনও যুক্তিতেই বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
মহালটি খোলে দেওয়ার বিষয়ে সর্বাঙ্গসুন্দর একটি কর্তৃপক্ষীয় নীতি ঘোষণা করাই যায় এবং সে-নীতির উপর নির্ভর করে কাজ শুরু করাও খুবই সম্ভব। তথাপিও ঘোষিত নীতি না মেনে অনিয়ম-দুর্নীতির পাঁকে পড়ে ঘুরপাক খাওয়ার প্রচলিত অভ্যস্ততায় নিমগ্ন থাকাও কোনও কঠিন কাজ নয়, বরং সবচেয়ে সহজ। যেমনটা সম্ভব হয়েছে টাঙ্গুয়ার হাওরে নীতির ভিত্তিতে কাজে নেমে নীতি না মেনে কাজ উদ্ধার করার পর টাঙ্গুয়ার জীবপ্রকৃতিকে মরণাপন্ন করে তোলা। তেমন যেন না হয়, রোগী যেন শল্য চিকিৎসকের ছুরির তলায় মৃত্যুর কোলে ঢলে না পড়ে।