স্টাফ রিপোর্টার ::
শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের টাইলা বাজারে বাচ্চাদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে ৪ সহোদরকে কুপিয়ে জখম ও তাদের ঘরবাড়িতে হামলা-ভাঙচুর এবং লুটপাটের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার ৪নং আসামি অসিত রঞ্জন দাসকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শান্তিগঞ্জ থানার এসআই অনুপদ দেবনাথের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টাইলার গ্রামের পার্শ্ববর্তী ঠাকুরভোগ হাওরে অভিযান চালিয়ে আসামি অসিত রঞ্জন দাসকে গ্রেপ্তার করেন। সে টাইলা গ্রামের মৃত জ্ঞান রঞ্জন দাসের ছেলে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাতে গুরুতর আহত পরিমল চন্দ্র দাস বাদি হয়ে টাইলা গ্রামের ঝুনু দাসকে প্রধান আসামি করে এবং ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে সম্পৃক্ত করে শান্তিগঞ্জ থানায় ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/৫০৬(২)/১১৪ ও ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৬।
মামলায় টাইলা গ্রামের মৃত বিনোদ বিহারী দাসের ছেলে ঝুনু দাস (৬০), তার সহোদর বিকেশ চন্দ্র দাস (৫৮), মৃত মাখন দাসের ছেলে সুষেন দাস (৫৫), মৃত জ্ঞান রঞ্জন দাসের ছেলে অসিত চন্দ্র দাস (৪২), মৃত নুনু দাসের ছেলে ভানু দাস (৪৫) ও প্রাণকৃষ্ণ দাস (৩০), বিক্রয় দাসের ছেলে দীপক দাস (৩০) ও বিউটন দাস (৩২), মৃত বিধু রঞ্জন দাসের ছেলে বিক্রয় দাস (৬০), ঝুনু দাসের তিন ছেলে হরি দাস (২৮), নিতাই দাস (২৬), গৌর নিতাই দাস (২৪), সুষেন দাসের দুই ছেলে সুবল দাস (২৮), সুবোধ দাস (২৫), ভানু দাসের ছেলে স্বপন দাস (২০), বিকেশ দাসের ছেলে বিবেক দাস (২২), মৃত মানিক দাসের ছেলে মিন্টু দাস(২৮) এই ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বাদির বড়ভাই গুরুতর আহত সুধারঞ্জন দাসের ছেলের সাথে একটি কুকুরের ছানা নিয়ে একই গ্রামের হামলাকারী আসামি ঝুনু দাস ও সুষেন দাসের ছেলেদের কথা কাটাাকটির এক পর্যায়ে বাচ্চাদের মধ্যে মারামারি হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাত ৯টার দিকে মামলার প্রধান আসামি ঝুনু দাস, বিকেশ দাস, সুষেন দাস ও অসিত দাসের নেতৃত্বে আসামিরা তাদের গ্রুপের ১৮/২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল টাইলা বাজার সংলগ্ন নিরীহ সুধারঞ্জন দাস ও তার তিন সহোদরের বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। এসময় হামলাকারীরা ৪ সহোদর সুধারঞ্জন দাস, সুজিত দাস, পরিমল চন্দ্র দাস ও সনজিৎ দাসকে মাথা পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। হামলাকারীরা আহত অটো মিল ব্যবসায়ী সুধারঞ্জন দাসের পকেটে থাকা নগদ ৫০ হাজার ও ব্যবসায়ী পরিমল চন্দ্র দাসের পকেটে থাকা ৬০ হাজার টাকা সহ মোট একলাখ ১০ হাজার টাকাসহ আসবাবপত্র লুটপাট করে নিয়ে যায়। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এ সময় আহতদের তাৎক্ষণিক উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে সুধারঞ্জন দাসের বাম চোখে রড দিয়ে আঘাত করায় তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. খালেদ চৌধুরী জানান, আসামি অসিত রঞ্জন দাসকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।