স্টাফ রিপোর্টার ::
জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেছেন, খেলাঘরের মাধ্যমে স্মার্ট সিটিজেন তৈরি হবে। তখন স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ করা সম্ভব হবে।
শনিবার সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে খেলাঘর সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী আরও বলেন, খেলাধুলার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলতে হবে। ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা এই খেলাঘরের মূল উদ্দেশ্য। আগামী প্রজন্মকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে কাজ করছে খেলাঘর।
তিনি বলেন, ৭০ বছরের পুরাতন এই প্রতিষ্ঠান লক্ষ্য ও আদর্শ ঠিক রেখে এখনও টিকে আছে। দেশপ্রেমে মানুষকে জাগ্রত করে বলেই আজও সুনামের সাথে কার্যক্রম চালু রয়েছে দেশের অন্যান্য স্থানে। তিনি আরও বলেন, আজকে জেলা খেলাঘরের সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব আসবে এবং ভাল নেতৃত্ব আসবে।
খেলাঘর সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি বিজন সেন রায়ের সভাপতিত্বে সম্মেলনের আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জেলা খেলাঘরের উপদেষ্টা ও প্রবীণ শিক্ষক ধূর্জটি কুমার বসু, প্রফেসর পরিমল কান্তি দে, প্রফেসর ন্যাথানায়েল এডউইন ফেয়ারক্রস, প্রবীণ শিক্ষক যোগেশ্বর দাস, কেন্দ্রীয় খেলাঘরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ স¤পাদক রুনু আলী, কেন্দ্রীয় খেলাঘরের স¤পাদক মাহবুবুর রহমান শিপন, কেন্দ্রীয় খেলাঘরের স¤পাদক রিদুয়ানুল হক, কেন্দ্রীয় খেলাঘর সদস্য বাদল রায়, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নিগার সুলতানা কেয়া।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, প্রত্যেক শিশুকে সঠিকভাবে এবং সুশিক্ষায় গড়ে তোলতে হবে। তাঁরা আরও বলেন, একজন শিক্ষক শিক্ষার্থীর প্রতি সঠিক দায়িত্ব পালন করেন বলেই আজ আমরা মানুষ হয়েছি। প্রত্যেক শিশুর মধ্যে একটি লক্ষ্য থাকতে হবে। যে লক্ষ্যে পৌঁছে সে আলোকিত মানুষ হয়। বন্ধু, প্রতিবেশীকে এবং নিজের মা বাবার মতো বন্ধুর মা বাবাকে ভালবাসতে হবে। বড়দের প্রতি শ্রদ্ধা ভক্তি রাখতে হবে। বক্তারা বলেন, বন্ধুদের সাথে অবশ্যই মিশবে, কিন্তু তাদের খারাপ কাজগুলো অবশ্যই বর্জন করতে হবে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মধ্যে মানবিক গুণাবলী থাকতে হবে।
তাঁরা আরও বলেন, আগে মানুষের মধ্যে প্রগতিশীলতা ছিল। এখন কমে এসেছে অনেকটা। ¯েœহ, মমতা, ভালবাসা, শ্রদ্ধা এখন কমে গেছে। ছোট বড় সবাইকে শ্রেণিমতো সম্মান ও ¯েœহ করা বাড়াতে হবে।
আলোচনা সভা শেষে জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীকে জেলা খেলাঘরের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
দুপুর ১টায় সাংগঠনিক অধিবেশনের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন খেলাঘর সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি বিজন সেন রায়। এতে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় খেলাঘরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ স¤পাদক রুনু আলী, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা খেলাঘরের সাধারণ স¤পাদক মনিকা দাস, দিরাই উপজেলা খেলাঘরের সাধারণ স¤পাদক রফিকুল ইসলাম, ছাতক উপজেলা কনকচাঁপা খেলাঘরের সাধারণ স¤পাদক বিজয় রায়, তাহিরপুর উপজেলা খেলাঘরের সভাপতি গোলাম সরোয়ার লিটন, শাল্লা উপজেলা খেলাঘরের সভাপতি কানন বালা সরকার।
এর আগে খেলাঘরের দুই বছরের আয়-ব্যয় হিসাব উপস্থাপনা করেন জেলা খেলাঘরের সাধারণ স¤পাদক রাজু আহমদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় খেলাঘর সদস্য বাদল রায়, সুখেন্দু সেন, বিশ্বনাথ কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ তাপসী চক্রবর্তী, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নিগার সুলতানা কেয়া, শিক্ষক কানিজ সুলতানা ফাতেমা।
সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা খেলাঘরের সম্মেলন উদ্বোধন করেন সংগঠনের উপদেষ্টা ধূর্জটি কুমার বসু। পরে আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। আনন্দ শোভাযাত্রায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত খেলাঘরের সদস্যরা অংশ নেন।
বিকাল সাড়ে ৩ টায় বিজন সেন রায়কে সভাপতি করে ও রাজু আহমদকে সাধারণ স¤পাদক করে ৩১ সদস্যবিশিষ্ট জেলা খেলাঘরের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গঠনের পর শপথবাক্য পাঠ করান কেন্দ্রীয় খেলাঘরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ স¤পাদক রুনু আলী। পরে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।