শহীদনূর আহমেদ ::
দিরাই উপজেলার কালনী নদীর ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নদীতীরবর্তী এলাকার মানুষ। নদীর অব্যাহত ভাঙনে ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে গেছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, রাস্তাঘাটসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।
এদিকে উপজেলার তাড়ল ইউনিয়নের আমিরপুর গ্রাম রয়েছে হুমকির মুখে। এই গ্রামের অনেকের ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ইতোমধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে। নদী তীরের রাস্তাটিও গ্রাস করেছে কালনী। এছাড়া শত বছরের পুরনো কবরস্থানটিও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঝুঁকিতে রয়েছে ২০০ বছরের পুরনো মসজিদটিও।
সরেজমিনে আমিরপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের খেয়াঘাট এলাকা থেকে গ্রামের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত কালনী নদীর দুই তীরের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট নদী ভাঙনের কবলে পড়েছে। গ্রামের বাসিন্দা যুক্তরাজ্য প্রবাসী রুহুল আমীনের দালানঘর, পুকুর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর তীরে অবস্থিত অনেকের বসতঘর হুমকির মুখে রয়েছে। গ্রামবাসীর চলাচলের রাস্তা ভাঙনের কবলে পড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। গ্রামের একমাত্র কবরস্থানটিও নদী গ্রাস করেছে। এখন গ্রামের মসজিদটি রয়েছে ভাঙনের মুখে।
গ্রামের একাধিক বাসিন্দা জানান, প্রতিদিনই কোনো না কোনো স্থান ভাঙছে কালনী। অব্যাহত ভাঙনে সব সময় আতঙ্কে থাকতে হয়। নদী ভাঙনে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আমিরপুর গ্রাম বিলীন হয়ে যাবে।
গ্রামের বাসিন্দা হুমায়ূন আহমদ বলেন, কালনী নদীর ভাঙন আমাদের এলাকা শেষ করে দিচ্ছে। ভাঙন থেকে বাঁচতে একাধিকবার পানি উন্নয়ন বোর্ডে আবেদন করেছি। স্থানীয় এমপির ডিও লেটার নিয়ে গিয়েছি। দিরাইয়ের পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা একাধিকবার সরেজমিন নদী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে সমীক্ষা করেছেন। প্রকল্প গ্রহণ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হলেও আশার আলো দেখা যায়নি। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙন রোধে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। নয়তো এক সময় নদীতে আমিরপুর গ্রাম হারিয়ে যাবে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শামসুদ্দোহা বলেন, কালনী নদীসহ জেলার ১৪টি নদী খননে একটি প্রকল্প গ্রহণের জন্য সার্ভে করা হয়েছে। এর মধ্যে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনাসহ দুই তীরের ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ তীররক্ষা কার্যক্রম ধরা রয়েছে। এই বৃহৎ প্রকল্পের মধ্যে কালনী নদী এলাকাসহ আমিরপুর গ্রাম ও নদী ভাঙন কবলিত এলাকাও রয়েছে। প্রকল্পের অনুমোদন হলে এসব এলাকায় নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।