স্টাফ রিপোর্টার ::
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের মাছিমপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আউয়াল প্রথমবারের মতো বারি বেগুন-১২ চাষ করে সফলতা অর্জন করেছেন। এটা সুনামগঞ্জের প্রথম ও নতুন উদ্ভাবিত বেগুন চাষ। এই প্রজাতির বেগুন চাষে আড়াই থেকে তিন মাসে ফলন হয়। বেগুন আকারে লাউ আকৃতির ও সবুজ রঙয়ের। এই বেগুন সুস্বাদু বলে জানিয়েছেন চাষীরা।
মুকশেদপুর গ্রামের বাসিন্দা ইদ্রিছ আলী বলেন, আমি প্রথমে ১ কেজি বেগুন ৪০ টাকায় কিনে খেয়েছি। বেগুন সুস্বাদু হওয়ায় পরবর্তীতে পাইকারি ২৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি কিনে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। এই বেগুন খেতে মানুষ খুবই পছন্দ করেন।
স্বরূপগঞ্জের সুবাস মিয়া বলেন, আমি ১ কেজি বেগুন ৪০ টাকায় কিনে খেয়েছি। খেতে খুবই ভাল লেগেছে।
কৃষক আব্দুল আউয়াল জানান, সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, বিএআরআই, সিলেট এর পরামর্শে এবং বৈজ্ঞানিক সহকারী রাজীব রাজ বৈদ্যের সহযোগিতায় তিনি এই প্রথম ২ কেয়ার জমিতে বারি বেগুন-১২ চাষ করেন। প্রাকৃতিক কারণে অনেক ফসল নষ্ট হয়েছে। যেসব গাছ বেঁচেছে এসব গাছে প্রচুর বেগুন ধরেছে এবং প্রতিটি বেগুন ওজনে আড়াই থেকে তিন কেজি হচ্ছে। বাজারে এ জাতের চাহিদা বেশি থাকায় তিনি বিক্রি করে ভালো উপার্জন করছেন।
তিনি বলেন, প্রতি কেয়ারে প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। উৎপাদিত বেগুন বিক্রি হয় প্রায় ৫০ হাজার টাকা। চারা রোপনের আড়াই মাস পর বেগুন ধরে। আমার বেগুন চাষ কীটনাশকমুক্ত। এবার আমি পরীক্ষামূলকভাবে বেগুন চাষ করেছি। যেহেতু বেগুন চাষ লাভজনক, আগামীতে বেশি পরিমাণে চাষ করবো।
সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএআরআই), সিলেটের বাস্তবায়নে চলতি রবি মৌসুমে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বারি বেগুন-১২ এর চাষাবাদ হয়েছে। বেগুন দেখতে সবুজ লাউ আকৃতির। খেতে খুবই স্বাদ।
এ বিষয়ে প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মাহমুদুল ইসলাম নজরুল বলেন, কৃষিবান্ধব সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে, খাদ্য পুষ্টিতে সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে, সিলেট বিভাগের কৃষি এবং কৃষকের চাষাবাদ ব্যবস্থায় আধুনিক প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং আয় উপার্জন বৃদ্ধির জন্য সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, বিএআরআই অত্যন্ত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। শীতকালে সিলেট অঞ্চলের অধিকাংশ জমি পতিত থাকে। পতিত জমিতে উচ্চ ফলনশীল এ জাত অক্টোবর মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত রোপন করা যায়। রোগ বালাই প্রতিরোধী বেগুনের এই জাত থেকে বীজ সংগ্রহ করা যায়। ইতিমধ্যে বারি বেগুন-১২ কৃষকের মাঝে অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। সুনামগঞ্জের কৃষকেরা আগামীতে কীটনাশকমুক্ত বারি বেগুন-১২ চাষের জন্য অনেক আগ্রহ হবে, এটাই আশাবাদী।