আমাদের দেশে বেআইনি কাজ-কারবার দেদার চলে। আইনরক্ষাকারি সংস্থাগুলোর তা ভালো করেই জানা আছে। বর্তমান সমাজসংস্থিতির অপরাধপ্রবণ পরিপ্রেক্ষিতে আইনের দৃষ্টিতে অপরাধমূলক কাজ-কারবার সামাল দেওয়াটা এ দেশে সত্যিকার অর্থেই ভীষণ কঠিন কাজ। আইনরক্ষাকারি সংস্থাগুলোর অভ্যন্তরে বিদ্যমান অনিয়ম-গাফিলতি তো আছেই, তা ছাড়া আইনি সংস্থাগুলোকে এখনও তেমন আধুনিক করে তোলা সম্ভব হয় নি। অপরদিকে আছে অপর্যাপ্ত আইন বা আইনের অভাব এবং তার সঙ্গে আইনের অপপ্রয়োগের অসুস্থ প্রবণতা। এই অসুস্থতা সম্পর্কে বিস্তৃত ব্যাখ্যা-বয়ার্ণনা এখানে দেওয়ার অবকাশ নেই। আশার কথা, দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার অভিপ্রায়ে নতুন নতুন আইন করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে আইন আধুনিক হয়ে উঠছে।
সকলেই জানেন দেশের স্বাস্থ্যখাতের প্রভুত উন্নতি হয়েছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু উন্নতির অনুষঙ্গ অনিয়ম-দুর্নীতিও স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে প্রকৃতপ্রস্তাবে সেবামূলক করে না তোলে গলাকাটা ব্যবসায় পর্যবসিত করে রেখেছে। যদিও চিকিৎসাকে অধিক সুলভ ও কম খরচের করে দেওয়া রাষ্ট্রের একটি কর্তব্য হওয়া উচিত। জাতি এই অবস্থার অর্থাৎ ব্যয়বহুল চিকিৎসাব্যবস্থা ও গরিব মানুষসহ সকলের ক্ষেত্রে চিকিৎসার সহজপ্রাপ্তির পথে পর্বত প্রমাণ প্রতিবন্ধকতার অবসানের প্রত্যাশী।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে একটি আইন চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে। দৈনিক সুনামকণ্ঠে (৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩) এ সম্পর্কিত সংবাদপ্রতিবেদেনের শিরোনাম ছিল, ‘মন্ত্রিসভায় আইন অনুমোদন \ ওষুধের লাইসেন্সহীন উৎপাদন-মজুদ-ভেজালে কঠোর সাজা’। প্রতিবেদনের শুরুতেই বলা হয়েছে, ‘ওষুধ আইন ২০২৩-এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছেন মন্ত্রিসভা। এর আওতায় ওষুধের লাইসেন্সহীন উৎপাদনে ১০ বছর সাজা; মজুদ কিংবা ভেজাল করলে যাবজ্জীবন কারাদ-ের বিধান রাখা হয়েছে।’ এ আইন দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে আরও সেবামূলক করে তোলবে এবং তৃণমূল পর্যায়ে চিকিৎসাসেবা সহজে পৌঁছে দিতে সহায়ক হবে অবশ্যই, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। যদি আইনটি যথাযথভাবে কার্যকর করা হয় বা কার্যকর করা যায়। অস্বীকার করার উপায় নেই যে, আমাদের দেশে আইন আছে আইনের প্রয়োগ নেই অথবা আইনের অপপ্রয়োগ হয়। ‘ওষুধ আইন ২০২৩’-এর প্রয়োগ হবে অপপ্রয়োগ হবে না, দেশের মানুষ এই প্রত্যাশায় আছে।