স্টাফ রিপোর্টার ::
ফসলরক্ষা বাঁধ খুঁড়ে বালু বাণিজ্য করছে একটি চক্র। প্রতিদিন ভোররাত থেকে শুরু হয় বালু উত্তোলনের কাজ। বারকি নৌকায় নিযুক্ত শ্রমিকরা প্রতিদিন দল বেঁধে বেলচা দিয়ে বালু উঠিয়ে টুকরি ভরে নৌকায় উঠায়। পরে সুবিধামতো সময়ে এগুলো বাল্কহেডে বোঝাই করা হয়। এভাবেই বালু বাণিজ্য চলছে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের ডলুরা গ্রামের দক্ষিণ পাশে ধোপাজান-চলতি নদীর পশ্চিম তীরে।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় কোয়ার্টার কিলোমিটার জায়গায় এখন বাঁধের কোন অস্তিত্ব নেই। স্থানীয়রা জানান, সাম্প্রতিক পাহাড়ি ঢলেও ভেঙেছে বাঁধের কিছু জায়গা। অপরদিকে বালুখেকোদের বালু বাণিজ্যের চলমান অবস্থার কারণে বাঁধের এ জায়গাটি এখন পুকুর সমান গভীর হয়ে গেছে। সেই সাথে বাঁধের প্রায় ৪শ মিটার জায়গার অ্যাপ্রোচ কেটেছে চক্রের সদস্যরা। সেখান থেকে উঠিয়ে নিয়েছে বালু এবং মাটি।
এদিকে, চলতি বছর এই বাঁধটির সংস্কার কিংবা গর্ত ভরাটের জন্য কোনো বরাদ্দ নেই বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্টরা। ফলে পাহাড়ি ঢলে হুমকির মুখে থাকবে আশপাশের ফসলি জমিসহ ঘরবাড়ি।
এলাকাবাসী জানান, এক সময় এ নদীর প্রস্থ কম থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় দিনে দিনে নদীর হিস্যা বাড়ছে। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে ফসলি জমি, ঘরবাড়িসহ নানা স্থাপনা। তাই এ ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
স্থানীয় কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, বাঁধ বা বাঁধের সাইট কেটে বালু উঠাচ্ছে এমনটি শুধু নয়। বাঁধের পাশের আমার নিজস্ব জমি থেকেও বালু নিচ্ছে বালুখেকো সিন্ডিকেট। বাধা দিলেও তারা তোয়াক্কা করছে না। আমি এ ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।
ইউপি সদস্য আক্তার হোসেন বলেন, ডলুরা গ্রামের দক্ষিণ অংশের এ জায়গাটি গর্ত হলেও এবার পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে কোন বরাদ্দ হয়নি। তাই পাহাড়ি ঢলে ফসলের ক্ষতি হবে এটি স্বাভাবিক।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার এসও মুনসুর রহমান জানান, চলতি বছর ডলুরা গ্রাম পার্শ্ববর্তী ধোপাজান-চলতি নদীর পশ্চিম তীরের বাঁধে বরাদ্দ হয়নি।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাদি উর রহিম জাদিদ জানান, সম্প্রতি দু’জনের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে। গত দিনেও বিশ^ম্ভরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ দু’ব্যক্তিকে আটক করেছিলেন। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। এরপরও প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বালু উত্তোলন করে অসাধু লোকজন।