মো. সাজ্জাদ হোসেন শাহ্ ::
তাহিরপুর উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের চারাগাঁও শুল্ক স্টেশনের তিন শতাধিক আমদানিকারক ও ব্যবসায়ী জিম্মি হয়ে পড়েছেন এলাকার চিহ্নিত কয়লা চোর সিন্ডিকেটের হাতে। কয়লা চুরি বন্ধের দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি হাজী আলকাছ উদ্দিন খন্দকার ও আমদানিকারক মো. জিয়াউল হকের নেতৃত্বে বড়ছড়া ও চারাগাঁও শুল্ক স্টেশনে কয়লা পরিবহন বন্ধের ডাক দেয়া হয়। পরে এ নিয়ে সকাল ১১টায় গ্রুপের সভাপতি হাজী আলকাছ উদ্দিন খন্দকার উপজেলার চারাগাঁও শুল্ক স্টেশনের বৈঠাখালি নদীতীরে আমদানিকারক, ব্যবসায়ী, লোড, আনলোড শ্রমিক ও শ্রমিক সর্দারদের নিয়ে কয়লা চুরি বন্ধে এক সভায় মিলিত হন।
সভায় বক্তব্য রাখেন গ্রুপের উপদেষ্টা ও তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আবুল হোসেন খান, সাধারণ সম্পাদক অমল কান্তি কর, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. জিয়াউল হক, তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন খন্দকার লিটন, গ্রুপের সহ-সভাপতি হাজী ফরিদ গাজী, কোষাধ্যক্ষ হাজী জাহের আলী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আবুল খায়ের, প্রচার সম্পাদক হাজি ছিদ্দিক মিয়া, উত্তর শ্রীপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও আমদানিকারক আলী হায়দার, ইউপি চেয়ারম্যান হাজী এম ইউনুছ আলী, গ্রুপের কার্যনির্বাহী সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব খসরুল আলম, রণধীর পাল বেণু, হাজী আব্দুল কুদ্দুস, হাজী আব্দুস সামাদ মুন্সী, আব্দুল কুদ্দুস, আব্দুল খালেক, গ্রুপের সচিব রাজেশ তালুকদার, আলাই সর্দার প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, গত কয়েক বছর ধরে চারাগাঁও শুল্ক স্টেশনের একটি চিহ্নিত চোর সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি হয়ে বছরে কোটি কোটি টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে আমদানিকারক ও এখানে আসা ব্যবসায়ীদের। এ চক্রটি স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় থেকে শুল্ক স্টেশনে গত কয়েক বছর ধরে কয়লা পরিবহনের সময় কয়লা চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। কেউ তাদের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কথা বললে রাতের আঁধারে তাদের বাহিনী দিয়ে নির্যাতনসহ নানা ধরনের হয়রানি করে আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের।
ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, চারাগাঁও শুল্ক স্টেশনে চুরির কারণে দিনদিন এই স্টেশনে ব্যবসায়ী আসার সংখ্যা কমে যাচ্ছে। কারণ তাদের চোখের সামনেই এই সিন্ডিকেট কয়লা চুরি করলেও কেউ এর প্রতিবাদ করার সাহস পায় না।
এসব বিষয়ের উপর জোরালো প্রতিবাদ করে চারাগাঁও শুল্ক স্টেশন দিয়ে আমদানি কার্যক্রম বন্ধ করার হুঁশিয়ারিও দেন আমদানিকারকগণ।
সভা শেষে বৈঠাখালি থেকে ফেরার পথে আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি হাজি আলকাছ উদ্দিন খন্দকার, অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ মোহাম্মদ ইফতেখার হেসেন, বিশিষ্ট আমদানিকারক মো. জিয়াউল হকের সহযোগিতায় চুরি করে বিভিন্ন জায়গায় স্তূপ করে রাখা ১০ লক্ষ টাকা মূল্যের ৪ মেট্রিক টন চোরাই কয়লা জব্দ করা হয়। এরপর দুপুরে চারাগাঁও শুল্ক স্টেশনে তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের শাখা কার্যালয়ে আবারো বৈঠকে বসেন নেতৃবৃন্দ।
এসময় ব্যবসায়ীরা কয়লা চুরির সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের উপদেষ্টা হাজী আবুল হোসেন খান, সভাপতি হাজী আলকাছ উদ্দিন খন্দকার, অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, আজকের পর থেকে কোন কয়লা চুরির ঘটনা ঘটলে তার দায়ভার বহন করবে কয়লা পরিবহনের সংশ্লিষ্ট শ্রমিক সর্দারগণ এবং যেখানে যার দখলেই চোরাই কয়লা পাওয়া যাবে তার বিরুদ্ধে গ্রুপ কর্তৃক মামলা দায়ের করা হবে।