পত্রিকান্তরে প্রকাশ বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা বলে ঘোষণা দিয়েছেন সরকার দলীয় একজন নেতা। গত রবিবার (২২ জানুয়ারি ২০২৩) বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলার বেশ ক’টি ফসলরক্ষা বাঁধ পরিদর্শনকালে তিনি হাওরাঞ্চলের ভঙ্গুর অর্থনীতিকে মজবুত করার লক্ষ্যে তাৎপর্যম-িত ও অতীব গুরুত্বপূর্ণ এ ঘোষণা দিয়েছেন।
আমরা তাঁকে অভিনন্দন জানাই এবং তৎসহ তাঁর এই ঘোষণার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছি। হাওরাঞ্চলের কৃষক সমাজের বাঁচার দাবি, ফসলরক্ষা বাঁধে সকল প্রকার অনিয়ম-দুর্নীতি প্রতিরোধের আন্দোলন বাস্তবায়নের যাবতীয় কার্যক্রমে আমরা তাঁর পাশে থাকবো।
হাওররক্ষা বাঁধের দুর্নীতি নিয়ে সুনামগঞ্জে আন্দোলনের সূচনা হয় ২০১৭ সালে অকাল বন্যায় শতভাগ ফসলহানির পরিপ্রেক্ষিতকে কেন্দ্র করে। তখন সমগ্র দেশে, বিশেষ করে ভাটি অঞ্চলের সমাজমানসে সন্দেহাতীতভাবে ধারণা জন্মে যে হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজে নির্বিচার ও ব্যাপকাকারে দুর্নীতি হয়ে থাকে কীছু কীছু সংশ্লিষ্ট দুর্নীতিবাজ ঠিকাদার, প্রশাসনিককর্মী ও রাজনীতিকদের যৌথ প্রয়াস-পরিচালনায়, রীতিমতো সিন্ডিকেট সৃষ্টি করে। এর বিপরীতে ‘হাওর বাঁচাও, সুনামগঞ্জ বাঁচাও’ স্লোগান তোলে তখন একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে উঠে, এই আন্দোলনটি এখনও সাধ্যানুসারে সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা মনে করি এই আন্দোলনটি ওই নেতার ঘোষণার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করবে এবং তাঁর ঘোষিত হাওররক্ষা বাঁধে অনিয়ম প্রতিরোধের আন্দোলনকে জোরদার করার কাজে সহায়ক ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে। আমরা অন্যান্য সকল দলমত নির্বিশেষে এ অঞ্চলের সকল রাজনীতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনকেও এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ ও শরিক হওয়ার আহ্বান রাখছি। সব কথার শেষ কথাÑ সকলে মিলে সমস্যা সমাধানের সমাজ স্বীকৃত, সহজ ও সমুন্নত পথে দেশের হাওরাঞ্চলে হাওর রক্ষা বাঁধ নির্মাণে সংঘটিত হওয়া ও হতে পারে এমন অনিয়ম-দুর্নীতি নির্মূলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলুন। সুনামগঞ্জবাসী এক হোন, ভাটি অঞ্চলের মানুষ এক হোন। ভুলে গেলে চলবে না, কৃষিই দেশের অর্থনীতির মেরুদ- এবং কৃষক না বাঁচলে কৃষি বাঁচবে না।