হোসাইন আহমদ ::
শান্তিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ সদর, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলা নিয়ে সুনামগঞ্জের অন্যতম বৃহৎ হাওর ‘দেখার হাওর’। দেখার হাওরকে বলা হয় বোরো ফসলের ভা-ার। দেখার হাওরে রয়েছে ১২ হাজার হেক্টর ফসলি জমি। চলতি বছর শান্তিগঞ্জ উপজেলার দেখার হাওর অংশের উথারিয়া বাঁধের বিপজ্জনক বাঁধ খ্যাত মূল ক্লোজার এখনো অরক্ষিত রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শান্তিগঞ্জের দেখার হাওরের উথারিয়া বাঁধের মূল ক্লোজার ০৬নং পিআইসির অধীনে। পিআইসি কমিটির সভাপতি নুর মিয়া ও সাধারণ স¤পাদক ফজল উদ্দিন।
দেখার হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজের সময় সীমা অর্ধেক পেরিয়ে গেলেও প্রভাবশালী মৎস্যজীবী, কয়েকজন জনপ্রতিনিধির চাপে পিআইসি কমিটির লোকজন মূল ক্লোজারে কাজ করতে পারছেন না।
বাঁধের মূল ক্লোজার ০৬নং পিআইসির অধীনে ১১৭মিটার অংশের দুই পাশে কাজ শুরু হলেও উথারিয়া বাঁধের মূল ক্লোজারের কাজ স¤পন্ন না হওয়ায় দেখার হাওরের ১২ হাজার হেক্টর ফসলি জমি হুমকির মুখে রয়েছে।
রবিবার (২২ জানুয়ারি) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বড় বড় ট্রামট্রাক দিয়ে বাঁধে মাটি ফেলা হচ্ছে। পাশাপাশি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধে বাঁশের আড় তৈরি করে মাটি ফেলা হচ্ছে। তবে হাওরের উথারিয়া বাঁধের বিপজ্জনক বাঁধখ্যাত মূলক্লোজার এখনো অরক্ষিত রয়েছে।
কৃষক আব্দুল ওয়াদুদ জানান, শান্তিগঞ্জ উপজেলার উথারিয়া ক্লোজার এই হাওরের ডেঞ্জার পয়েন্ট। এই ক্লোজার অরক্ষিত রেখে পুরো হাওরে কাজ করলে কোন লাভ হবে না। আগাম বন্যা আসলে আমাদের ফসল ঘরে তুলতে পারবো না। আমরা অনেক শঙ্কায় আছি। প্রতি ৩ বছর পরপরই এই অঞ্চলে একবার আগাম বন্যা আসে।
পিআইসি কমিটির সাধারণ স¤পাদক ফজল উদ্দিন জানান, দেখার হাওরের মূলক্লোজারে কাজ করতে পারছি না। কিছু জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালী মৎস্যজীবীরা আমাদেরকে উথারিয়ার মূলক্লোজারে মাটি ফেলতে দিচ্ছে না। তবে আমাদের পিআইসি’র দুইপাড়ে মাটি ভরাটের কাজ শেষ হয়েছে। এখন ড্রেসিং ও দুর্মুজের কাজ চলছে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব আলম বলেন, দেখার হাওরের উথারিয়া বাঁধের মূলক্লোজারটি দেখার হাওরের ভিতরে অবস্থিত জলমহালের পানি নিষ্কাশনের জন্য স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের কাছে মৎস্যজীবীরা ফেব্রুয়ারির ২০ তারিখ পর্যন্ত খোলা রাখার আবেদন করেছেন। তবে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে উথারিয়া ক্লোজারটি বন্ধ করা হবে। না হলে বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনোয়ারউজ্জামান বলেন, উথারিয়া ক্লোজার দিয়ে হাওরের পানি নিষ্কাশনের জন্য স্থানীয় মৎস্যজীবীরা খোলা রাখার আবেদন করেছেন। পাশাপাশি হাওরের নিচু জমির পানি নিষ্কাশনের জন্য ক্লোজারটি খোলা রাখা হয়েছে। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে উথারিয়া ক্লোজারটি বন্ধ করে বাঁধের কাজ সম্পন্ন করা হবে।