স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জ শহরের উকিলপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা সাধন ভদ্র আর বেঁচে নেই। শনিবার সকাল ১০টায় সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভোগছিলেন। ওইদিনই ধোপাখালিস্থ কেন্দ্রীয় শ্মশানঘাটে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান শেষে তাঁর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
ইকোওয়ান ট্রেনিং সেন্টার থেকে ১ম ব্যাচে ট্রেনিং নিয়ে আসা মুক্তিযোদ্ধাদের যে দলটির সেলা সাব সেক্টরে পোস্টিং হয়, সেই দলের প্রথম সামরিক অপারেশনের প্রথম কমান্ডার ছিলেন সাধন ভদ্র। তাঁর গ্রামের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কোরবাননগর ইউনিয়নের ব্রাহ্মণগাঁওয়ে। পরে বসতি স্থাপন করেন উকিলপাড়ায়।
সাধন ভদ্র ১৯৬৬ সালে জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। এরপর ১৯৭২ সালে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। সাধন ভদ্র প্রবেশিকার গ-ি পার হবার আগেই আইয়ুব বিরোধী তীব্র গণআন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। এই আন্দোলনের এক পর্যায়ে ছাত্রনেতারা শহরের বিভিন্ন দোকান ও প্রতিষ্ঠান থেকে মহাপরাক্রমশালী লৌহমানব আইয়ুব খানের ছবি উঠিয়ে এনে তৎকালীন পুরাতন কলেজ প্রাঙ্গণে (বর্তমানে আলফাত উদ্দিন স্কয়ার) জড়ো করে ভেঙে ফেলেন। ওই আইয়ুবের ছবিভাঙা আন্দোলনে ছোট সাধন ভদ্রও জড়িত ছিলেন। আইয়ুববিরোধী পুরো আন্দোলনকালেই তিনি ছিলেন সক্রিয়।
সাধন ভদ্র ছাত্র ইউনিয়নের (মতিয়া গ্রুপ) রাজনীতি করতেন। কলেজ সংসদ নির্বাচনে ছাত্র ইউনিয়নের প্যানেলে তিনি সাংস্কৃতিক স¤পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭১ পর্যন্ত বাঙালি জাতির মুক্তির প্রস্তুতির লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে পরিচালিত কর্মসূচি যেগুলো সুনামগঞ্জে পালিত হতো তার সবগুলোতেই সাধন ভদ্রের ছিল সক্রিয় অংশগ্রহণ। পরবর্তীতে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন সাধন ভদ্র এবং অসীম সাহসিকতার পরিচয় দেন।