শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি ::
শান্তিগঞ্জ উপজেলায় ৯৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছে। এসকল প্রতিষ্ঠানের ৪র্থ, ৫ম ও মাধ্যমিক স্কুলের ৬ষ্ঠ শ্রেণির প্রায় শিক্ষার্থীরা রিডিং পড়তে পারে না। স্কুলে আসার প্রতিও তাদের রয়েছে অনীহা। এছাড়া আশঙ্কাজনক হারে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ছে। শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আনোয়ার উজ জামান ২০২১ সনের ৩ মে থেকে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি পাল্টে দিয়েছেন শান্তিগঞ্জ উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার চালচিত্র। মো. আনোয়ার উজ জামান ইউএনও হিসেবে যোগদানের পর থেকেই প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে চলতি বছরে শান্তিগঞ্জ উপজেলার ৯৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিশুদের অক্ষরজ্ঞান, পঠন ও লিখন দক্ষতা এবং গাণিতিক সংখ্যার ধারণা তৈরির লক্ষ্যে একটি প্রতিযোগিতামূলক কার্যক্রম শুরু করেন। মৌলিক শিখন দক্ষতা যাচাই (বাংলা, ইংরেজি রিডিং, যোগ বিয়োগ গুণ ও ভাগ) ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলা, ইংরেজি ও গণিতের মৌলিক শিখন দক্ষতা অর্জন করতে পেরেছে যথাক্রমে প্রায় ৭৫%, ৪৫% ও ৫৭% শিক্ষার্থী। যা ২০২২ শিক্ষাবর্ষের মাঝামাঝিতে ছিল প্রায় ৩০%, ১০% ও ২১%। এমতাবস্থায় শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের মৌলিক শিখন দক্ষতার ঘাটতি পূরণের জন্য উপজেলার ২০ জন কর্মকর্তাকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম মনিটরিংয়ের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ ব্যতীত জনপ্রতিনিধিগণও এ কর্মসূচিতে স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। তার ফলশ্রুতিতে শিক্ষার্থীদের মৌলিক শিখনের বেশ অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় শান্তিগঞ্জ উপজেলার ৯৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে থেকে সাফল্য অর্জনে সেরা দশটি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আগামী ১ জানুয়ারি উপজেলা শিক্ষা সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে পুরস্কৃত করা হবে। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। তাছাড়াও সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, জেলা প্রশাসক সুনামগঞ্জসহ উপজেলার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত থাকবেন। উপজেলা প্রশাসনের এ ধরনের উদ্যোগ শিক্ষকদেরকে তাদের দায়িত্ব পালনে আরও উৎসাহিত করবে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার উজ জামান বলেন, শিশুর চেতনার প্রকৃত বিকাশ ঘটে থাকে প্রাথমিক স্তরেই। আমরা যদি শিক্ষার ভিত শক্তিশালী করতে চাই তাহলে অবশ্যই প্রাথমিক শিক্ষার উপর সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন যোগ্যতাস¤পন্ন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক, সচেতন অভিভাবক, সুশীল সমাজের ভূমিকা এবং সরকারের সার্বিক সহযোগিতা। তাহলেই একদিন শিশুর চেতনার প্রাথমিক শিক্ষা পরিপূর্ণতা লাভ করবে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ পাবে একটি আলোকিত জাতি।