1. [email protected] : admin2017 :
  2. [email protected] : Sunam Kantha : Sunam Kantha
বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ০১:২০ পূর্বাহ্ন
ঘোষণা ::
সুনামগঞ্জ জেলার জনপ্রিয় সর্বাধিক পঠিত পত্রিকা সুনামকন্ঠে আপনাকে স্বাগতম। আমাদের পাশে থাকার জন্য সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। আমাদের পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন - 01711-368602

মহাপ্লাবনের কথা ভুলতে পারছেন না জেলাবাসী

  • আপডেট সময় শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২

শামস শামীম ::
গত ১৬ জুন রাতে ‘কবি জীবনানন্দ দাশের রাঙা মেঘ সাঁতরায়ে অন্ধকারে’ হাবুডুবু খেয়ে শতাব্দীর ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে দিশেহারা ছিল সুনামগঞ্জ জেলাবাসী। হাইটেক প্রযুক্তির যুগে দেশ ও আন্তর্দেশ থেকে বাস্তব ও ভার্চুয়ালিভাবে কার্যত বিচ্ছিন্ন ছিল হাওর জনপদ সুনামগঞ্জ। ধনী-দরিদ্র সবাই আশ্রয়, খাবার, নিরাপদ পানির খুঁজে দিশেহারা ছিলেন। শিশু, নারী, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের নিয়ে স্বজনরা উদ্বিগ্ন ছিলেন। টানা এক সপ্তাহ বিদ্যুৎহীন ও নেটওয়ার্কহীন অবস্থায় বিভীষিকাময় দিন কাটিয়েছেন জেলার নব্বই ভাগেরও বেশি মানুষ। এই বছরের মাঝামাঝি সময়ে সর্বকালের ভয়াবহ এমন বন্যা এখনো দুঃস্বপ্ন মনে হচ্ছে ভুক্তভোগীদের। প্রকৃতির সঙ্গে লড়াকু জেলাবাসী ভুলতে পারছেনা বন্যার ভয়াবহতার কথা। এক অজানা দুঃস্বপ্ন এখনো তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে। মহাপ্লাবন এখনো তাদের চোখে চোখ রাঙাচ্ছে যেন। তবে আগের দিন জেলা প্রশাসন বন্যা মোকাবেলায় মতবিনিময় করলেও ভয়াবহ বন্যার প্রস্তুতি ছিলনা বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
এই অঞ্চলের প্রবীণ ও সুধীজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ শহরের গোড়া পত্তনের দেড়শ বছরের ইতিহাস রয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কিছু চিহ্ন পাওয়া যায় সেসব ইতিহাসে। কিন্তু এমন সর্বব্যাপী প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহতার অতীত রেকর্ড নেই। সরকারি হিসেবে জেলার ৯০ ভাগ সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাসহ মানুষের ঘরবাড়ি তলিয়ে গিয়েছিল। মাঠ-ঘাট ও সড়ক ডুবে ছিল একাকার। একতলা বিশিষ্ট ৯৫ ভাগের বেশি ঘরবাড়ি তলিয়ে ছিল বানের জলে। জেলার সবচেয়ে উঁচু সড়ক সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে ছিল বুক পানি। তাই ১৬ জুন রাত থেকেই সারাদেশের সঙ্গে প্রায় ৫ দিন যান চলাচল বন্ধ ছিল। নিরাপদ পানি ও খাবারের জন্য হাহাকার করেছেন স্বচ্ছল পরিবারের মানুষজনও। গ্যাস সরবরাহও বন্ধ ছিল কয়েকদিন। প্রায় এক সপ্তাহ পরে বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছিল জেলাবাসী। বন্যার সেই দুঃস্বপ্ন এখনো তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে ভুক্তভোগীদের। ক্ষতিগ্রস্তরা এখনো ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে ওঠতে পারেনি বলে জানিয়েছেন। তবে বন্যার্তদের জন্য সারাদেশের মানুষের মানবিক সহায়তা ছিল প্রচুর। মমতাসিক্ত হাতে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তারা। বছর শেষে এসে দেশবাসীর মানবিক এই সহায়তার প্রতি এখনো অকুণ্ঠ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা।
সুনামগঞ্জের স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মতে মেঘালয়ে ১৪ জুন থেকে টানা রেকর্ড বৃষ্টি হয়েছিল। ওই দিন থেকে টানা তিন দিনে প্রায় আড়াই হাজার মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল। সেই বৃষ্টির পানি সুনামগঞ্জের সুরমা, যাদুকাটা, চলতি, খাসিয়ামারাসহ বিভিন্ন সীমান্ত নদী হয়ে প্রবল ¯্রােত নিয়ে আছড়ে পরে সুনামগঞ্জে। প্লাবিত করে ¯্রােতের তোড়ে ভেঙে যায় সড়ক, সেতু, কালভার্ট, ঘরবাড়ি। প্রথমেই ছাতক পৌর শহর ও উপজেলার ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। পরে দোয়ারাবাজার, সুনামগঞ্জ সদর, তাহিরপুর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা তলিয়ে যায় ১৬ জুন সন্ধ্যার আগে। ১৭ জুন দুপুরের মধ্যে পুরো জেলার প্রায় ৯০ ভাগ প্লাবিত হয়ে যায়।
ভুক্তভোগীরা জানান, অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে পানি তেমন বাড়বেনা ও স্বাভাবিক বন্যার সঙ্গে নিয়ত লড়াকু মনের শক্তির উপর বিশ্বাস করে বাসাবাড়িতেই রয়ে যায় মানুষ। সন্ধ্যার পর হুহু করে বাড়তে থাকে পানি। জেলার বিভিন্ন উপজেলার সব সড়ক ও গ্রাম প্লাবিত হয়। শহরের প্রতিটি সড়ক ও পাড়া মহল্লা ডুবে যায়। ১১টি বিদ্যুৎ সাবস্টেশন বিদ্যুৎ স্টেশন ডুবে যাওয়ায় সন্ধ্যার আগেই বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে পুরো জেলা। পল্লী বিদ্যুতের জেলা শহরের সাবস্টেশনটিও ডুবে যায়। সন্ধ্যার পরেই বজ্রপাত ও ভারী বর্ষণে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন মানুষ। রাত ১০টার মধ্যেই শহরের সব বাসাবাড়ি, রাস্তাঘাট, দোকানপাট প্লাবিত হয়। এসময় সারা জেলায় মোবাইল নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নেটওয়ার্ক ও সড়ক যোগাযোগ থেকে সারাদেশের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে জেলাবাসী। বজ্রপাত ও ভারী বর্ষণের আতঙ্কিত রাতে পানি বেড়ে সব বাসাবাড়ি প্লাবিত হওয়ায় নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য অস্থির হয়ে ওঠেন মানুষ। ছাদে, সিঁড়িঘরে, সিঁড়িতে আশ্রয় নেয় মানুষ। প্লাবিত ঘরবাড়িতে রেখে আসা কাপড়, চোপড়, বাসন-কোসন, বিছানাপত্র, সংগৃহিত খাবার ভেসে যায় ও নষ্ট হয়ে যায়। এসময় সরকারি হিসেবে অন্তত ২৬ জন মারা যাওয়ার কথা স্বীকার করা হয়। শুকনো খাবার ও নিরাপদ পানির হাহাকারে অতিষ্ঠষ্ট হয়ে পড়েন স্বচ্ছল মানুষও। গ্যাস লাইনও বন্ধ হয়ে যায়। ১৮ জুন জেলা প্রশাসকের অফিসের দোতলায় আশ্রয় নেওয়া বারান্দায় এক গাড়ি চালকের স্ত্রী সন্তান জন্ম দেন। ওই দম্পতির সন্তানের নাম ‘প্লাবন’ রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারিভাবে ওই পরিবারকে আর্থিক ও মানবিক সহায়তাও দেওয়া হয়।
প্রশাসনের সংশ্লিষ্টরা জানান, বন্যার ভয়াবহতায় অফিসের পরস্পর থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন তারা। কেউ কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিল না। তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহঙ্গীর আলম বুক সমান পানি ভেঙে বিশেষ ব্যবস্থায় সিলেট বিভগীয় কমিশনারকে সার্কিট হাউসে এসে বিষয়টি অবগত করেন। প্রশাসনের নৌ ব্যবস্থা না থাকায় প্রথমে বন্যার্তদের কোন সহযোগিতা করা সম্ভব হয়নি। এসময় প্রসূতি, শিশু ও বৃদ্ধ ও গবাদিপশু নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় ছিলো মানুষ। কয়েকদিন পরে ত্রাণের নৌকা দেখলেই নারী পুরুষ ভিড় জমাতেন। তবে বন্যার ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. জিয়াউল হক ও সেলিম আহমদ বন্যার্তদের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি, শুকনো ও রান্না করা খাবার বিতরণ শুরু করেন।
এদিকে বন্যার সময় স্বাভাবিক যাদের মৃত্যু হয়েছিল তাদের গোরদাফন যথাসময়ে সম্পন্ন করতে পারেননি স্বজনরা। বিভিন্ন স্থানে এমন কয়েকজনকে বাক্সবন্দি করে রাখা হয়েছিল। যা পানি নেমে যাওয়ার পরে দাফন করা হয়। শতাব্দীর এমন ভয়াবহ বন্যা এভাবে আর্থিক, মানসিক ও অবকাঠামোগত ক্ষয়-ক্ষতিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলো জনপদ সুনামগঞ্জ। বন্যার্ত মানুষরা তখন সড়কে নৌকা দিয়ে যাতায়াত করতেন। তবে পর্যাপ্ত নৌকা না থাকায় এসময় পরিবারকে বাঁচাতে খাদ্য ও নিরাপদ পানি সংগ্রহ করতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। ঘরহারা অনেক মানুষ প্রায় দুই মাস সড়কে খুপড়ি করে থেকেছে। জেলার সবগুলো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ডুবে গিয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থাও সংকুচিত হয়ে গিয়েছিল।
৩০ জুন জেলা প্রশাসন বন্যায় প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির তথ্য প্রকাশ করে। এতে জানানো হয় অর্ধ লক্ষ ঘরবাড়ি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের মতে ২ হাজার কোটি টাকার সড়ক, সেতু ও কালভার্টের ক্ষতি হয়। সড়ক বিভাগের প্রায় ৩শ কোটি টাকার সড়ক ও সেতুর ক্ষতি হয়। মৎস্য বিভাগের প্রায় ২৫ হাজার পুকুরের মাছ ভেসে গিয়ে ১০০০ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। প্রাণিসম্পদ বিভাগের ৫ শতাধিত গরু, শতাধিক মহিষ, হাজারো ছাগল, ৫ শতাধিক ভেড়া, এক লক্ষ হাঁস ও প্রায় ৩ লক্ষ মোরগ মারা যায়। খাদ্য বিভাগের প্রায় ৩০০ মে.টন খাদ্য একেবারে নষ্ট হয়। এছাড়া ১ হাজার হেক্টর আউশ ধানসহ খাবার ও বীজের জন্য সংগৃহিত কৃষকের গোলায় রাখা বিপুল খাদ্য শস্য ও শুকনো ধান নষ্ট হয়। বিদ্যুৎ বিভাগের ১১টি সাবস্টেশন ডুবে ও অন্যান্য অবকাঠামোরও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পল্লী বিদ্যুতের একটি সাবস্টেশন ডুবে প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এভাবে সরকারি প্রতিটি দফতরের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। জেলার সব সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিচতলা ডুবে গিয়েও ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। বন্যার্ত পরিবারের জামা কাপড়, জুতো, ঘরের খাবার, আসবাবপত্র, ফার্নিচার ও ঘরবাড়ির বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয় যা এখনো হতদরিদ্র পরিবারগুলো কাটিয়ে ওঠতে পারেনি।
জানা গেছে, সরকারি হিসেবে প্রায় অর্ধ লক্ষ মানুষের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হলেও মাত্র ১২ হাজার পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়। সরকারিভাবে পুনর্বাসনের জন্য ২ হাজার ৬০০ বান টিন, নগদ ৫ কোটি টাকা, ৩ হাজার মে.টন চাল, ৩৬ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়। এছাড়াও সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাব, কোস্টগার্ড, বিআইডব্লিউটিএসহ সরকারের সকল বিভাগ আলাদাভাবে বন্যার্তদের সহায়তা করে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিপুল পরিমাণে খাদ্য সহায়তা ও নগদ অর্থসহায়তা নিয়ে পাশে দাঁড়ায় মানুষ। এভাবে পুরো জুন ও জুলাই মাস পর্যন্ত বন্যার্তদের পাশে ছিল দেশের মানুষ। বেসরকারিভাবে অন্তত শত কোটি টাকার সহায়তা প্রদান করা হয়েছে বলে নানা সূত্রে জানা গেছে।
১৬ জুন রাতে সুনামগঞ্জ জেলা মহাপ্লাবনে বিপর্যস্ত হলেও মোবাইল নেটওয়ার্ক চলে যাওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে শুক্রবার বিকেলে বন্যার্ত মানুষকে উদ্ধার ও মানবিক সহায়তার জন্য সেনাবাহিনীকে নামানোর জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়। কিন্তু রাস্তাঘাট ডুবে থাকায় এবং হেলিকপ্টার অবতরণের জন্য মাঠগুলো পানিতে তলিয়ে থাকায় প্রায় তিনদিন পরে এসে সুনামগঞ্জে পৌঁছে সেনাবাহিনী। বন্যার ভয়াবহতা দেখতে ২১ জুন সিলেটে ছুটে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সুনামগঞ্জে আসার কথা থাকলেও হেলিকপ্টার অবতরণের স্থান ডুবে থাকায় সুনামগঞ্জের সংশ্লিষ্টরা বিশেষ ব্যবস্থায় সিলেটে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বন্যার ভয়াবহতার কথা জানান। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, সেনাবাহিনী প্রধান, বিজিবি প্রধান, র‌্যাব প্রধান, পুলিশ প্রধানসহ বিভিন্ন বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা এসে বন্যার্তদের সহায়তা দেন। এভাবে ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত জেলাবাসীর পাশে সরকারি ও বেসরকারিভাবে সহায়তা প্রদান করা হয়।
সুনামগঞ্জ উপজেলার বুড়িস্থল গ্রামের রশিদ আহমদ (৬৫) বলেন, আমাদের এলাকার কোন ঘর বাকি ছিলনা পানি ওঠার। সবাই অনেক কষ্ট করেছে। কাঁচা ঘরবাড়ির লোকজন পথে বসে গেছে। স্বচ্ছল মানুষও খাবার ও নিরাপদ আশ্রয়ের খুঁজেছেন। এমন মানবিক দুর্যোগ আমরা দেখিনি।
সাদকপুর গ্রামের আশিক মিয়া (৭০) বলেন, বন্যার ¯্রােতে ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট সংসারের জিনিষপত্র ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল। কেউ কারো খোঁজ নিতে পারেনি। এক সপ্তাহ যোগাযোগহীন ছিলাম আমরা। ঘরের খাবার, হাঁস-মোরগ, বাসন কোসন, জরুরি কাগজপত্র, কাপড় চোপড়, বিছানাপত্র, ফার্নিচার সব নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এখনো গরিবরা সংসারে ধীরে ধীরে জমা করা আসবাবপত্র জোগাতে পারেনি।
অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার (৭০) বলেন, অতীতে এমন বড়ো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করিনি আমরা। এই বন্যায় নিঃস্ব হয়ে গেছে লাখো পরিবার। তারা এখনো পুনর্বাসিত হতে পারেনি। এই অঞ্চলের নদ-নদী খনন করলে অন্তত এই ভয়াবহতা থেকে কিছুটা হলেও সুফল মিলতো। তবে বন্যা মোকাবেলায় প্রশাসন ও সরকারি বেসরকারি জরুরি সেবা দানকারীদের কোন প্রস্তুতিই ছিলনা বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, আমরা বন্যাপ্রবণ এলাকার মানুষ। তাই আমাদেরকে বিশেষ বিবেচনায় রাখা উচিত।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত বলেন, সুনামগঞ্জ শহরের দেড়শ বছরের গোড়াপত্তনের ইতিহাস পাওয়া যায়। যেখানে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথাও আছে। তবে এমন ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ অতীতে মোকাবেলা করেনি মানুষ। যারা বন্যার ভয়াবহতা দেখেনি তারা বুঝতে পারবেনা এই মহাপ্লাবনের ক্ষত কতটা গভীরে ছিল। রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, সংসারের জিনিসপত্রের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এখনো মানুষ সেই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠতে পারেনি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

© All rights reserved © 2016-2021
Theme Developed By ThemesBazar.Com