বিষয়টা এমন যে, কার্যত বারবার ঘটেই চলেছে এবং পুনরাবৃত্তি হবে জেনেও লিখতেই হচ্ছে। পত্রিকায় (দৈনিক সুনামকণ্ঠ, ২৭ ডিসেম্বর ২০২২) শিরোনাম করা হয়েছে, ‘শান্তিগঞ্জে হাওর শুকিয়ে মৎস্য নিধন \ হুমকির মুখে ১৫শ একর জমির ফসল \ ক্ষতিগ্রস্ত সহস্রাধিক কৃষক’।
এইভাবে মাছ ধরার জন্যে হাওরের ভেতরের বিল-ডোবার জল সেচ করে পানি সরিয়ে দিয়ে সংলগ্ন ফসলি জমিকে শুকিয়ে তোলা হচ্ছে। জলের অভাবে কৃষক এই জমিতে বোরো ফসলের চাষ করতে পারছেন না, জমি পতিত রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে করে প্রথমত জল সেচ করে জলাভূমির মাছমারার আইনত নিষিদ্ধ কাজটি করে আইন ভাঙা হচ্ছে, দ্বিতীয়ত প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিঘিœত হচ্ছে, তৃতীয়ত কৃষক ধান চাষ করতে না পেরে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার মধ্যে দিয়ে প্রকৃতপ্রস্তাবে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা বিঘিœত হচ্ছে, চতুর্থত আইন ভাঙার বা আইন অমান্যের কোনও প্রশাসনিক প্রতিকার হচ্ছে না বিধায় প্রকারান্তরে দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে। এই সব বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনার দরকার আছে কিন্তু সম্পাদকীয়র সীমিত পরিসরে তার কোনও অবকাশ নেই। আমরা কেবল বলছি, এই ধরণের বিচার-বিবেচনাহীন কর্মকা- প্রশাসনের পক্ষ থেকে সচেষ্ট হয়ে অবশ্যই বন্ধ করে দিতে হবে। এমন কোনও জলাধার ইজারা দেওয়া যাবেনা যে-গুলোকে ইজারা দিলে সামাজিক ও প্রাকৃতিক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা আছে এবং ইজারা দেওয়া জলাশয়ে জলসেচ করা যাবে না এই আইনটিকে কেবল কাগজেপত্রে সীমাবদ্ধ না রেখে কার্যক্ষেত্রে কার্যত কার্যকর করে তোলতে হবে। তা-না হলে দায়িত্বহীনতার সংস্কৃতিকে লালন করার ক্ষমাহীন অপরাধে প্রশাসন অপরাধী বিবেচিত হবেন, যদিও জনগণ সেটার বিচার করতে পারবেন না। কিন্তু তাঁরা নিশ্চিত জানবেন তাঁদের দুর্ভোগের জন্য দায়ি কারা।